Happening Now
আহিরীটোলা হত্যাকাণ্ডঃ কোলকাতা এখন অপরাধের সবর্গরাজ্য
৪ঠা মার্চ সকালবেলা আহিরিটলা ঘাটে সন্দেহভাজন দুই মহিলাকে দেখা যায় ট্রলি হাতে নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় আটক করা হয় ঐ মহিলাদের, পরে ট্রলি খুললে দেখা যায়, ভেতরে কাটা দেহ।


ট্রলির ভেতর কাটা দেহ! কি হয়েছিল?
- গঙ্গার ঘাটে সাতসকালে ট্রলির মধ্যে উদ্ধার মাথা কাটা দেহ। কলকাতার আহিরিটলা ঘাটে ট্রলি করে কাটা দেহ ফেলতে এসে আটক হয়েছেন দুই মহিলা। অভিযুক্ত দুই মহিলার নাম ফাল্গুনি ঘোষ ও আরতি ঘোষ।
- স্থানীয় বাসিন্দাদের কোথায় ৩রা মার্চ ২০২৫ সকাল ৭টায় কুমারটুলির আহিরীটোলা ঘাটে ট্যাক্সি করে নামেন দুই মহিলা হাতে একটা বড় ট্রলি। তাতে আবার তালা ঝোলানো। সন্দেহ হয় ঘাটে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
- সন্দেহ আরও বারে যখন দেখা যায় দুই মহিলার কেউই ট্রলি টানতে পারছেন না ঠিক করে। কি আছে এমন ট্রলিতে যে তা টানা যাচ্ছে না।
- স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করেন দুই মহিলাকে, অন্যদিকে ট্রলির উপর রক্তের ছাপ ক্রমশ আরও সন্দেহ বারে আশেপাশের লোকের।
- খবর দেওয়া হয় আহিরীটোলা ঘাট পুলিশকে। ততক্ষণে অবশ্য অন্যদিকে শুরু হয়ে গেছে ধুন্দুমার কাণ্ড। সাধারণ মানুষের জেরার মুখে পরে ফাল্গুনি ও আরতির তখন অবস্থা খারাপ।
- একবার বলছে ট্রলির ভেতর কাসার বাসন তো একবার বলছে মৃত কুকুরকে জলে ফেলতে এসেছেন তারা।
- স্থানীয় মানুষ অবশ্য ততক্ষণে বুঝে গেছেন ওর ভেতর সাংঘাতিক কিছুই আছে।
- এর কিছু পরেই আসে পুলিশ, খোলা হয় ট্রলি আর তখনই চোখ মাথায় ওঠে সবার। ট্রলির ভেতর আস্ত একটা মহিলার মাথা কাটা দেহ!
- কাপরে জরানো দেহ থেকে তখন বেরচ্ছে রক্ত, গায়ের শাড়ি তখন জরানো। সাথে সাথে আটক হন ফাল্গুনী ও আরতি।
কেন খুন হলেন মহিলা?
- আহিরীটোলা হত্যাকাণ্ড সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আড়াই বছর আগে মধ্যমগ্রামের বীরেশ পল্লীতে বাড়ি ভারা নিয়ে আসেন মেয়ে ফাল্গুনি ও মা আরতি।
- বাড়ি ভারা নেওয়ার পর থেকেই মা ও মেয়ের ব্যাবহারে অসঙ্গতি খুঁজে পায় এলাকার প্রতিবেশীরা।
- অস্বাভাবিক ব্যাবহার ,প্রাই বাড়িতে পুরুষমানুষের আনাগোনা নজরে আসে প্রতিবেশীদের, সন্দেহর চোখে দেখতেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের ধারনা ছিল মধুচক্রের মতো খারাপ কিছু চালায় ফাল্গুনী ও আরতি।
- সেই সন্দেহই অবশ্য ঠিক বলে জানা গেছে। আসামের জোরহাট থেকে অভিযুক্তের সঙ্গে থাকতে এসে নিজের পিসি শাশুরি জেনে ফেলে মা-মেয়ের জঘন্য ঘটনাIএই মধুচক্রের ঘটনা জেনে ফেলতেই নিজের পিসি শাশুরিকে খুন করে ফাল্গুনী। মৃত বৃদ্ধার নাম সুমিতা ঘোষ।
- তাদের আরও অভিযোগ মানুষের বাড়ি থেকে চুরি করত আরতি।
- মধুচক্র ছাড়াও, মহিলার হত্যার পেছনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুলিশ দাবি করেছে যে, মূলত অভিযুক্তদের লোভই এই হত্যাকাণ্ডের কারণ, তারা মৃতার সম্পত্তি দখল করতে চেয়েছিল।
- কর্মকর্তা জানান, নিহত মহিলা আসামের জোরহাটে একাধিক সম্পত্তির মালিক ছিলেন এবং ব্যাংকের লকারে সোনার গহনাও ছিল। তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে যে, মৃতার ডেবিট কার্ডের পিন সম্প্রতি পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং মেয়ে একটি এটিএম কিয়স্ক থেকে প্রায় ২৫,০০০ টাকা তুলে নিয়েছিল।
নৃশংসতার চূড়ান্ত!
- তদন্ত অনুযায়ী খবর, কয়েকদিন ধরেই নাকি ফাল্গুনির বাড়িতে নাকি আসতেন সুমিতা। কিন্তু কেন তা জানা যায়নি।
- সূত্র অনুযায়ী খবর সুমিতাকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হলে ফাল্গুনী ও আরতি এরপর বেরন দেহ লোপাটের উদ্দেশ্যে।
- আসেন বড়বাজার কেনেন দেহর দুর্গন্ধ ঢাকার স্প্রে, বড় ট্রলি ও সাথে প্লাস্টিক। ফিরে আসেন বাড়িতে সেই রাত্রেই বডিকে ট্রলিতে ঢোকানোর জন্য কাটা হয় সুমিতার দেহ।
- বটি দিয়ে কাটা হয় গোড়ালি। কাটা হয় মাথা তবেই তো গিয়ে ট্রলিতে ঢুকবে দেহ।
- পরেরদিন ফাল্গুনী ও আরতি ট্রলি নিয়ে আসে কলকাতায়। ভ্যান এবং ট্যাক্সি করে তারা ট্রলি নিয়ে আসে আহিরীটলা ঘাটে।
- তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, নীল ট্রলি ব্যাগটি বড়বাজার এলাকা থেকে কেনা হয়েছিল এবং মেয়ে একটি গহনার দোকানে গিয়ে ৫০,০০০ টাকার গহনার অর্ডার দিয়েছিল।
- এতবড় নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েও নাকি বিন্দাস ছিল মা মেয়ে। ট্যাক্সিতে বসেও নাকি তারা বাড়ি গিয়ে কি খাবে তার প্ল্যানিং চলছিল। তাহলে কতটা অপরাধবোধহীন মানুষ হতে পারে?
- ৫৫ বছর বয়সী সুমিতা ঘোষের দেহের ময়নাতদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, “দুই মহিলার নির্যাতনের” কারণে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত মারা যান, বলে কর্মকর্তা জানান। ময়নাতদন্ত আরও ইঙ্গিত দেয় যে হত্যাকাণ্ডটি দেহ বিকৃত করার অন্তত ৩৬ ঘণ্টা আগে সংঘটিত হয়েছিল।
- তবে এখানেই শেষ নয়, পুলিশী তদন্তে আহিরীটোলা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেরিয়ে আসছে আরও অনেক তথ্য? এবং উঠছে প্রশ্ন? কোথায় গেল মাথা? হারহিম করা এই ঘটনায় কেঁপে উঠেছে স্বয়ং পুলিশ কমিশনারও
এখানেও রাজনৈতিক তরজা
- আহিরীটোলা হত্যাকাণ্ড নিয়েও শুরু রাজনৈতিক চাপানউতর। বিরোধীপক্ষের নিশানা কোলকাতার পুলিশ প্রশাসন, বাংলার আইন প্রশাসন নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বিরোধীপক্ষরা।
- তাদের বক্তব্য বাংলায় বিশেষত কলকাতায় কেন বার বার মাথা চারা দিয়ে উঠছে অপরাধ? মানুষের মন থেকে ভয় উঠে যাচ্ছে, বার বার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা কিন্তু কেন? এর থেকেই প্রমাণ হয় বাংলা অপরাধের ও অপরাধির জন্য কতটা নিরাপদ!
- অন্যদিকে তৃণমূলের বক্তব্য অপরাধ আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে এর সাথে সরকারের কি হাত আছে?
- এত অপরাধের পেছনে কি তাহলে কোন দায় নেই সরকারের? তাহলে কি বাংলা এখন অপরাধীদের সবর্গরাজ্য?




ব্রডকাস্ট চ্যানেল








ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার






