হিমন্তর হুঁশিয়ারি, মিয়ানদের উচ্ছেদ অভিযান চলবেই অবিরাম

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, বেআইনি দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলবে অবিরাম। মিয়ানরা মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কখনও শান্তিতে থাকতে পারবে না বলেও স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি। পাশাপাশি জুবিন গার্গের রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তকেই এখন তাঁর প্রধান অগ্রাধিকার বলে মন্তব্য করেন।

মিয়ানদের রেহাই নেই হিমন্তর আগুনে হুঁশিয়ারি!

• মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, যতদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, ততদিন মিয়ানদের অবৈধ দখলদারিত্ব চলবে না।
• তাঁর মন্তব্যে স্পষ্ট, রাজ্যের জমি রক্ষা করা এখন প্রশাসনের প্রথম দায়িত্ব।
• তিনি বলেন, “মিয়ানরা শান্তিতে ঘুমোতে পারবে না, যতদিন আমি এই চেয়ারে আছি।”
• প্রশাসনিকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চলছে নিরবচ্ছিন্নভাবে, কোনও রাজনৈতিক চাপেই তা থামবে না।
• মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এই অভিযানে মানবিক দৃষ্টিকোণ বজায় থাকলেও আইনের চোখে অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
• মিয়ানদের বেআইনি দখল উচ্ছেদ করে রাজ্যের সুরক্ষিত পরিবেশ ফিরিয়ে আনা তাঁর একমাত্র লক্ষ্য বলে জানান তিনি।

বেহালিতে উচ্ছেদ অভিযান ফের শুরু প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ!

• সোনিতপুর জেলার বেহালি এলাকায় নতুন করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
• মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রশাসন ইতিমধ্যে জমির মালিকানা যাচাই শুরু করেছে এবং বেআইনি দখলকারীদের সনাক্ত করা হচ্ছে।
• স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেই যেন অভিযান সম্পন্ন হয়।
• উচ্ছেদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
• মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই অভিযান রাজ্যের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য, কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়।”
• সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্ছেদের পর উন্নয়নমূলক প্রকল্পও শুরু হবে সেই এলাকাগুলিতে।

জুবিন গার্গের মৃত্যুতদন্তেই এখন মুখ্যমন্ত্রীর চোখ!

• মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জুবিন গার্গের মৃত্যু আমাদের সকলের কাছে রহস্য, আমি সত্য উদ্ঘাটন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেব না।”
• বিশেষ তদন্ত দল (SIT) ইতিমধ্যে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শেষ করে চার্জশিটের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
• হিমন্ত জানান, তদন্তের গতিকে দ্রুত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।
• যেহেতু ঘটনাটি সিঙ্গাপুরে ঘটেছে, তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমোদন প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
• তাঁর মতে, এই তদন্তই এখন অসমবাসীর আবেগের কেন্দ্র, তাই কোনও রাজনৈতিক প্রভাব সহ্য করা হবে না।
• মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, “সত্য সামনে আসবেই, যে-ই দোষী হোক না কেন।”

গৌরব গগৈ বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা তোপ!

• হিমন্ত বলেন, “গৌরব গগৈয়ের পাকিস্তান যোগ নিয়ে যা বলেছি, তার প্রতিটি শব্দ সত্য।”
• তিনি জানান, কংগ্রেস চাইলেও তিনি এখনই তথ্য প্রকাশ করবেন না, কারণ তদন্ত চলমান।
• মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক মাস আগে বা জানুয়ারিতে প্রকাশ করলে কী আসে যায়, সত্য তো পালাবে না।”
• তিনি কংগ্রেস নেতা দেবব্রত শইকিয়ার এফআইআর আহ্বানকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
• তাঁর দাবি, এতে তদন্ত আরও স্বচ্ছ হবে এবং রাজনৈতিক নাটক নয়, সত্য প্রকাশই হবে মুখ্য।
• হিমন্তের মন্তব্যে বোঝা যায়, এই বিতর্ককেও তিনি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন কৌশলে।

জুবিন স্মৃতিসৌধে সন্দেহভাজনদের ভিড়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ!

• হিমন্ত অভিযোগ করেন, অনেক সন্দেহভাজন ব্যক্তি জুবিন গার্গের সমাধিস্থলে গিয়ে নিজেদের আদিবাসী প্রমাণের চেষ্টা করছে।
• তিনি বলেন, “ওরা জুবিন গার্গের গান শোনেনি, তাঁর জীবন জানে না, তবুও ভান করছে।”
• মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, এই ধরনের প্রচেষ্টা রাজ্যের সংস্কৃতিকে বিকৃত করছে।
• তাঁর দাবি, যারা নিজেদের প্রকৃত পরিচয় আড়াল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
• হিমন্ত বলেন, “জুবিনের প্রতি ভক্তি দেখাতে হলে সৎ হতে হবে, নাটক নয়।”
• প্রশাসন ইতিমধ্যে ওই সমাধিস্থলে সন্দেহভাজনদের তৎপরতা নিয়ে নজরদারি শুরু করেছে।

তদন্তে গতি আনতে দিল্লির সঙ্গে সমন্বয়!

• মুখ্যমন্ত্রী জানান, জুবিন গার্গের মৃত্যুতদন্তে আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলা জরুরি।
• এজন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমোদন দ্রুত পেতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
• হিমন্ত বলেন, “দিল্লির অনুমোদন পাওয়া গেলে SIT চার্জশিট দ্রুত জমা দিতে পারবে।”
• সরকারের মতে, দেরি হচ্ছে কারণ ঘটনাটি বিদেশে ঘটেছে, কিছু নথি যাচাই বাকি।
• মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, “অসমবাসী খুব শিগগিরই জানবে, আসল সত্য কী।”
• প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত শেষ হলেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হবে, কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।

Editor’s Note

অসমের রাজনৈতিক আবহ এখন যেন আগুনে ঘেরা এক মঞ্চ, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজের প্রশাসনিক কঠোরতা আর জাতীয়তাবাদের বার্তাকে একসঙ্গে মিশিয়ে এক নতুন রাজনৈতিক নাটক রচনা করছেন। মিয়ানদের উচ্ছেদ অভিযানকে তিনি শুধু আইনরক্ষার পদক্ষেপ নয়, বরং “অসমীয় চেতনা রক্ষার” সংগ্রাম হিসেবে দেখাচ্ছেন। তবে এই দৃঢ় অবস্থানের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মানবিকতা বনাম রাজনীতির সংঘাত। জুবিন গার্গের রহস্যমৃত্যু, SIT তদন্ত, গৌরব গগৈ বিতর্ক—সবকিছু মিলিয়ে তাঁর বক্তব্যে যেমন আত্মবিশ্বাস, তেমনি লুকিয়ে আছে রাজনৈতিক কৌশলের সূক্ষ্ম বুনন। এখন প্রশ্ন একটাই—হিমন্তর এই অভিযান কি সত্যিই ন্যায়ের পথে এগোচ্ছে, নাকি এটি এক পরিকল্পিত রাজনৈতিক থ্রিলার, যার শেষ দৃশ্য এখনো পর্দার আড়ালে?