০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Lorem Ipsum is a Dummy Text

“আমি গ্রামে যাব” শহর থেকে পালিয়ে গ্রামে যেতে চান তৃণমূল সাংসদ

হাওড়া তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংসদ করা নিয়ে আপত্তি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বাবুন ব্যানার্জির। কান দেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। হয়েছিলেন হাওড়ার সাংসদ। সেই সাংসদের গলাতেই এখন উল্টো সুর, পছন্দ না হাওড়া। আসতে চান উলুবেড়িয়াতে। হাওড়ার বড় বড় মানুষজনের চক্করে নাকি কাজ করতে পারছেন না তৃণমূল সাংসদ, অভিযোগ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

হাওড়ার সাংসদের বেসুরো সুরে তোলপাড় রাজনীতি

  • হাওড়ার বড় বড় মানুষজনের চক্করে নাকি কাজ করতে পারছেন না হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ, অভিযোগ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
  • এ কথা একেবারে খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, কোনও ঘোমটা না রেখেই। ফলে কোনো রকমের জল্পনার অবকাশই আর রাখেননি তিনি।
  • মঙ্গলবার উলুবেড়িয়ার করাতবেড়িয়ায় একটি সবলা মেলার উদ্বোধনে এসেছিলেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানেই প্রকাশ্যে তিনি বলেন, ‘‘তোমরা আমায় গ্রামীণ এলাকায় নিয়ে নাও। ওদিকটা (হাওড়া শহর) আমার ভাল লাগে না। আমি আগেও বলেছিলাম, কিন্তু ওখানে আমাকে দেওয়া হয়নি।’’
  • তিনি স্পষ্টভাবে জানান, হাওড়া শহর এলাকা তার পছন্দ নয়। উলুবেড়িয়ার মতো গ্রামীণ পরিবেশেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
  • তৃণমূল সাংসদ প্রসূনবাবু বলেন, হাওড়ায় না বরং উলুবেড়িয়ায় নাকি উনি মন্ত্রী হলে গোল্ড কাপ পেতেন। হাওড়ায় ইতিমধ্যেই অনেক ভাল নেতা, ভাল মানুষ রয়েছেন। তার নাকি ওখাণে কোন প্রয়োজন নেই, উনি পালিয়ে আসতে চান।
  • হাতজোড় করে সবলা মেলা থেকে তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে আমাকে এইদিকে নিয়ে আসুন। মানুষের জন্য আরও কাজ করতে চাই। হাওড়ার বড়লোকদের এলাকায় বড় বড় চিন্তা। কিন্তু এই জায়গা হাওড়ার সবচেয়ে ভালো জায়গা।’’
  • তাহলে কি উনি কাজ করতে চান কিন্তু উনাকে কাজ করতে দিচ্ছে না কেউ?
  • তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তিনি হাওড়ায় প্রশাসনের কাজ নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত। তাই, তিনি হাওড়া লোকসভা কেন্দ্র ছেড়ে উলুবেড়িয়ার মতো গ্রামীণ লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভবিষ্যতে লড়াই করতে চান।
  • প্রসঙ্গত, ২০১৩ সাল থেকে হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ পদে রয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকার মানুষের মধ্যে তাঁর যথেষ্ট জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
  • এমনকি ২০২4 সালের লোকসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।
  • তবে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এখন কেন এই আকস্মিক মনোভাব পরিবর্তন? তাঁর গলায় কেন এমন ক্ষোভ?

দলের অন্দরেও বিতর্ক

  • ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় তাঁকে হাওড়া কেন্দ্রে প্রার্থী করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই তৈরি হয়েছিল মতানৈক্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে।
  • যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিরোধিতা পাত্তা না দিয়ে প্রসূনকেই প্রার্থী করেন এবং এমনকি ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলেন প্রকাশ্যে।
  • পরে অবশ্য সত্যিকারেই ছোটভাইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন তিনি। কিন্তু হাওড়ায় প্রসূনের সাংসদ হওয়া নিয়ে তেড়েফুঁরে উঠেছিলো বাবুন, করেছিলো বিস্ফোরক মন্তব্য।
  • প্রসূনের কথায় হাওড়ায় প্রার্থী হওয়ার মতো আরও অনেক যোগ্য লোক ছিল তৃণমূলে। রেগে ফুঁসে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বলেছিলেন যে ক্লাস ফাইভে উঠতে পারে না, তাকে গ্র্যাজুয়েট করা হয়েছে কি দেখে?
  • মোহনবাগান ক্লাবের সাধারণ সভায় নাকি বাবূণকে ব্যবহার করেছিল প্রসূন। তিনি বলেন ‘দিদি আমার ভগবান, হয়ত বুঝিয়ে বললে দিদি ঠিক বুঝবে’।
  • কিন্তু দিদি বোঝেনি ঊল্টে ভাইয়ের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন তিনি। এখণ সেই প্রসূনের গলাতেই শোনা যাচ্ছে ঊল্টো সুর।
  • এই বক্তব্য রাজনীতির ময়দানে বহু প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। কি এমন হয়েছে হাওড়ায়, যে তিনি পালিয়ে আসতে চাইছেন? তিনি কি আদৌ হাওড়া ছাড়তে পারবেন? উলুবেড়িয়াতেই কি ভবিষ্যতের জন্য তাঁর রাজনৈতিক লক্ষ্য নির্ধারিত হচ্ছে?
  • সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর মিলবে এসব প্রশ্নের, তবে আপাতত হাওড়ার এই বেসুরো সুর ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়ছে বইকি।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার