০৬ জানুয়ারি ২০২৫

আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলা: মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সিবিআইয়ের আপিল গ্রহণ হাইকোর্টের!

আরজি কর মেডিকেল কলেজ অভয়ার ধর্ষণ খুন মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের আপিল গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে, একই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপিল নাকচ আদালতের।

সিবিআইয়ের আপিল গ্রহণ

  • অভয়ার বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ এখনও জ্বলছে সাধারণ মানুষের ভেতরে। আরজি কর চিকিৎসক ধর্ষণ খুন মামলায় আইনি জটিলটা এখনও বর্তমান।
  • ঘটনার ছয় মাসবাদে রায় দিয়েছিলো শিয়ালদা হাইকোর্ট। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় পেয়েছিলো ঘটনার সাথে একমাত্র জড়িত ও দোষী সঞ্জয় রায়।
  • সেই নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক । অভয়ার এই রায় নিয়ে প্রথম থেকেই মতবিরোধ ছিল রাজ্য সরকার থেকে অভয়ার মা বাবার মধ্যেও। রাজ্য সরকার পাল্টা কেস দিয়েছিল সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অন্যদিকে অভয়ার মা বাবা পাল্টা কেস করতে চেয়েছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্বে, কারণ তাদের মতে প্রথম থেকেই তদন্তে বাধার সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার, সিবিআইও ঠিকভাবে তদন্ত করেনি।
  • এই নিয়েই সিবিআই ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল, যেখানে সঞ্জয় রায়কে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট সেই আপিল গ্রহণ করেছে।
  • একই রায়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও আপিল করেছিল, কিন্তু হাইকোর্ট সেই আপিল গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে।
  • অভয়ার বাবা-মা মামলাটির পুনরায় তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন জরুরি শুনানির জন্য গ্রহণ করেনি এবং বিষয়টি ১৭ মার্চের জন্য নির্ধারণ করেছে।

ট্রায়াল কোর্টের রায়

  • চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি, কলকাতার একটি আদালত সঞ্জয় রায়কে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩১ বছর বয়সী এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে।
  • আদালত রায়ে সঞ্জয় রায়কে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও সেই টাকা অস্বীকার করেছেন অভয়ার বাবা মা।

ঘটনার বিবরণ

  • ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক প্রশিক্ষণরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরেরদিনেই গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয় রায়কে।
  • ঘটনার স্থান থেকে সমস্ত তথ্য প্রমাণ পেয়েই গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয়কে। এই ঘটনার বহিঃপ্রকাশ হতেই শুরু হয় বিক্ষোভ।
  • চিকিৎসক সম্প্রদায়ের সদস্যরা হাসপাতালের নিরাপত্তা এবং নারীদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আরজি কর মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং জুনিয়র ডাক্তাররা ধর্মঘট শুরু করেন, যা পরবর্তীতে অন্যান্য হাসপাতালেও ছড়িয়ে পড়ে।
  • মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে "অমানবিক ও নিন্দনীয় অপরাধ" বলে অভিহিত করেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "এই অপরাধের একমাত্র শাস্তি হলো দোষীকে ফাঁসি দেওয়া।"
  • প্রাথমিকভাবে, কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে সঞ্জয় রায় নামের এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে। তবে, তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠলে, বিষয়টি সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। সিবিআই তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ এবং ফরেনসিক প্রমাণের মাধ্যমে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার