Happening Now
"গোপনীয়তা ভাঙার অধিকার নেই!" সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধের নির্দেশ আদালতের
অনুমতি ছাড়া বাড়িয়ে লাগানো যাবে না সিসিটিভি, সম্প্রতি এই রায় দিয়েছে আদালত। সম্পত্তির মালিকানা যতই যৌথ হোক না কেন, গোপনীয়তার অধিকার সবসময় অগ্রাধিকার পাবে।


দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ
- সহ বাসিন্দার সাথে কথা না বলে লাগানো যাবে না সিসিটিভি ক্যামেরা। এমনি নির্দেশ দিয়েছে কোলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
- আদালতের রায় অনুযায়ী, সহ-ট্রাস্টি বা সহ-বাসিন্দার সম্মতি ছাড়া আবাসিক স্থানের অভ্যন্তরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও পরিচালনা করা তাদের গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘন করে।
- এবার শোনা যাক আসল ঘটনাটি কি? এই মামলায়, আবেদনকারী তার পিতা কর্তৃক স্থাপিত একটি প্রাইভেট ট্রাস্টের অধীনে একটি দ্বি-তলা বাড়ির নির্দিষ্ট অংশে বসবাস করছিলেন। বাড়িটির নাম মল্লিক ভবন।
- এই মামলার সূত্রপাত হয় ইন্দ্রনীল মল্লিক ও শুভেন্দ্র মল্লিক নামে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের কারণে। ইন্দ্রনীল ও তার সহযোগীরা বাড়ির ভেতরে মোট নয়টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেন। এর মধ্যে পাঁচটি ক্যামেরা বসানো হয় শুভেন্দ্র ও তার ছেলের ব্যবহৃত অংশে, যা তাদের সম্মতি ছাড়াই করা হয়।
- এই ক্যামেরাগুলি শুভেন্দ্রের দরজা, জানালা এবং বসবাসের জায়গার চারপাশে স্থাপন করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল তার দৈনন্দিন কার্যকলাপ নজরদারি করা। এতে তার গোপনীয়তার অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তদুপরি, তিনি এই ক্যামেরার ফুটেজ দেখার বা নিয়ন্ত্রণ করার কোনো ক্ষমতা রাখতেন না, ফলে তিনি ভিডিও রেকর্ডিং যাচাই বা পরিচালনা করতে পারতেন না।
- শুভেন্দ্র ক্যামেরাগুলোর বিষয়ে আপত্তি জানালেও ইন্দ্রনীল ও তার সহযোগীরা বিষয়টি উপেক্ষা করেন। বাধ্য হয়ে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তি বজায় রাখার পরামর্শ দিলেও, ক্যামেরাগুলি ব্যবহার অব্যাহত থাকে।
- নিরুপায় হয়ে শুভেন্দ্র এপ্রিল ২০২৪ সালে সিভিল মামলা দায়ের করেন। তিনি আদালতের মাধ্যমে তার সম্মানের সাথে বসবাসের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি এবং সিসিটিভিগুলি অপসারণের জন্য আদেশ চান। পাশাপাশি, ক্যামেরাগুলোর কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশও চান।
সহ-বাসিন্দার সম্মতি ছাড়া ব্যক্তিগত আবাসিক স্থানে সিসিটিভি নয়
- শহর সিভিল কোর্ট শুভেন্দ্রের দাবি খারিজ করে দেয়। আদালত উল্লেখ করে যে, এই ক্যামেরাগুলি ২০২২ সালে বসানো হয়েছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে চালু ছিল। যেহেতু শুভেন্দ্র আগে কখনও তার গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি, তাই আদালত তার আবেদনে পর্যাপ্ত জোর খুঁজে পায়নি।
- এই রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে শুভেন্দ্র কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
- শুভেন্দ্রের আইনজীবী, অ্যাডভোকেট সুদ্ধসত্ব ব্যানার্জি, আদালতে যুক্তি দেন যে এই ক্যামেরাগুলি সাধারণ স্থান এবং শুভেন্দ্রের শোবার ঘরের প্রবেশপথের সামনে স্থাপন করা হয়েছে, যা তাকে সর্বক্ষণ নজরদারির আওতায় রাখছে।
- তিনি আরও অভিযোগ করেন যে নিম্ন আদালত যথাযথ কারণ ছাড়াই অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করেছে। ফলে, তিনি হাইকোর্টের কাছে নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করার অনুরোধ করেন।
- সব দিক বিবেচনা করে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয় যে, কোনো ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া তার আবাসিক স্থানে সিসিটিভি বসানো এবং পরিচালনা করা সম্পত্তি ভোগের স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘন করে।
- বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও উদয় কুমারের বেঞ্চ রায় দেয় যে, বসবাসকারী ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তার আবাসিক অংশে সিসিটিভি বসানো স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে।আদালত স্পষ্টভাবে জানায়— "আমাদের মতে, সহ-বাসিন্দা বা সহ-ট্রাস্টির সম্মতি ছাড়া আবাসিক স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং পরিচালনা করা তার সম্পত্তি ভোগের অধিকার সীমিত করে এবং গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করে।"
- এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে আদালত ইন্দ্রনীল মল্লিককে তার ভাই শুভেন্দ্র সাথে ভাগ করে নেওয়া বাড়ির পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়।
- এই রায়ের মাধ্যমে আদালত স্পষ্ট করেছে যে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকারে হস্তক্ষেপ আইনসম্মত নয় এবং তা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
#PrivacyViolation #CCTVInstallation #CalcuttaHighCourt #ResidentialPrivacy #LegalRights #RightToPrivacy #CCTVControversy #HighCourtRuling #LegalBattle #PrivacyMatters




ব্রডকাস্ট চ্যানেল







ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার











Copyright © All Rights Reserved by Truee News Bangla is a copyright property of Independent Media Corp