০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Lorem Ipsum is a Dummy Text

সিপিআইএম যুব নেতৃত্বঃ তরুণ নেতৃত্বের উত্থান, কিন্তু কি মিলবে সাফল্য?

ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে একসময় অপ্রতিরোধ্য শক্তি ছিল সিপিআইএম। কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ক্রমাগত রাজনৈতিক দুর্বলতা, ভোটের ক্ষয় এবং জনসমর্থনের অভাবে সংকটে দল।

সিপিআইএম যুব নেতৃত্ব -এর উত্থান: নতুন দিশা নাকি নতুন সমস্যা?

    ৩৪ বছর ধরে বাংলা রাজত্ব করেছিল যে দল সেই দল এখন লড়াই চালাচ্ছে নিজের অস্তিত্ব টুকু বজায় রাখার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই দল শাসন করেছে, গড়ে তুলেছিল শক্তিশালী সংগঠন, কৃষক আন্দোলন থেকে শিল্পায়নের নীতিতে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে দলটি। নিজেদের ফের দাঁড়ানোর লক্ষ্যে সিপিআইএম যুব নেতৃত্ব –দের তুলে আনা হয়েছে। কিন্তু লাভের খাতা শূন্য। সিপিআইএম যুব নেতৃত্ব এখন বুঝতে পারছে, নীচুতলায় শক্তি বাড়ানো ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। তাই এবার পার্টি তার কৌশল বদলেছে—প্রবীণ নেতৃত্বকে পিছনে সরিয়ে তরুণদের দায়িত্ব দিচ্ছে। মিনাক্ষী মুখার্জি, সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, প্রতীক উর রহমানের মতো নবীন নেতাদের সামনে আনা হয়েছে। এরিয়া কমিটি থেকে জেলা এবং রাজ্য কমিটিতেও তরুণদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, এই পরিবর্তন জরুরি, কারণ গত কয়েক দশকে পার্টির প্রভাব কমে যাওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি ছিল নতুন প্রজন্মের প্রতি আকর্ষণের অভাব। সেই সমস্যা থেকে বাঁচতেই মিনাক্ষী মুখার্জি, সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধরদের মতো সিপিআইএম যুব নেতৃত্বরা। বাংলার বাম দলের অবস্থা এখন অথৈবচঃ
  • বাংলার বাম দল সিপিআইএম যুব নেতাদের সামনে আনলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লবী হওয়া এক জিনিস, বাস্তব রাজনীতির ময়দানে লড়াই করা আরেক জিনিস। ২০১৯ ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তরুণ প্রার্থীদের সিংহভাগই শোচনীয়ভাবে হেরেছে। অধিকাংশের জমানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

বাংলার বাম দলের নতুন এজেন্ডা- নিচুতলায় কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ

  • গোঁড়ায় না গেলে কোনভাবেই যে সমস্যা সমাধান হবে না তা হোয়ত এতদিনে বুঝতে পেরেছে বাংলার বাম দল। পরিস্থিতি বুঝতে সিপিআইএম নেতৃত্ব এবার সরাসরি নীচুতলার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। তাদের দৈনন্দিন কাজ, সমস্যা এবং দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা হবে এবার থেকে।
  • রাজ্য ও জেলা নেতারা সরাসরি মাঠে নামবেন, পার্টির সাংগঠনিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজবেন। আর এই অভিযানেই এবার থেকে সাহায্য করবে সিপিএমের যুব নেতৃত্বরা।
  • তবে শুধু নিচুতলায় জনসংযোগ বাড়ালেই পুরানো স্থান উদ্ধার করা বেশ কঠিন সিপিআইএমকে তাই নতুনভাবে উদ্যমে কাজ শুরু করতে হবে। যুব নেতাদের শুধু সংগঠনের সামনে আনা যথেষ্ট নয়, তাদের হাতে শক্তিশালী কৌশল ও জনমুখী পরিকল্পনা তুলে দিতে হবে।

কেন ব্যর্থ হচ্ছে সিপিআইএম যুব নেতৃত্বরা? বার বার ব্যার্থ পুনরুত্থান পরিকল্পনা?

  • দিল্লীর ভোটে রীতিমত নিঃচিহ্ন হয়ে পরেছে সিপিআইএম। অথচ সামাজিক মাধ্যম খুললে বেশীরভাগ তরুন প্রজন্মই মার্ক্সবাদ নীতি নিয়ে বুলি আওড়াতে ব্যাস্থ তাহলে আসলে কেন এরম শোচনীয় অবস্থা সিপিএমের?
  • তার অন্যতম কারণ যোগ্য নেতাদের তুলে আনতে ব্যার্থ হচ্ছে বাংলার বাম দল। একসময় কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক মানুষের মধ্যে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলেছিল বাংলার বাম দল । কিন্তু আজ সেই প্রভাব আর নেই। মাঠপর্যায়ে কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে কেন পারছে না দল।
  • তৃণমুলের ভাতার মতো শক্তিশালী উপায়কে টেক্কা দিতেও সিপিএমের চাই চুরান্ত ব্যাবস্থাপনা।
  • এছাড়াও বাংলার বাম দলের জেতার পথে অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সিপিএমের জুব নেতৃত্বরা। অনভিজ্ঞতা এবং দলের প্রবীণদের মধ্যে দল নিয়ে কাজ করার অভাব আরও মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে ফিরে আসছে।

একসময়ের ‘অপরাজেয়’ বাংলার বাম দল

  • সিপিআইএম-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৪ সালে, যখন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) ভেতরে মতাদর্শগত বিভাজনের কারণে একটি নতুন দল গঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা এবং ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলোতে সিপিআইএম শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলে।
  • ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার ক্ষমতায় আসে এবং টানা ৩৪ বছর রাজ্য শাসন করে, যা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার শাসনে যা রেকর্ড গরেছে।
  • সিপিআইএম-এর শাসনকালে জমি আন্দোলন, গ্রামোন্নয়ন, শিক্ষার বিস্তার ও কৃষকের সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু শিল্পায়ন নীতিতে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমশ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে থাকে। এরই ফলশ্রুতিতে ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে, আর সিপিআইএম ধীরে ধীরে রাজনৈতিক প্রান্তিকতায় চলে যায়। বাংলার সেই অপরাজেয় বাংলার বাম দল এখন সিপিআইএম যুব নেতৃত্বদের হাত ধরে ফিরে আসতে চাইছে, বাঁচাতে মরিয়া নিজেদের অস্তিত্ব।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার