০৬ জানুয়ারি ২০২৫

তৃণমূল বনাম কংগ্রেসঃ দিল্লিতে পরাজয়ের পর কংগ্রেসের নতুন লক্ষ্য ‘বাংলা চলো’,

রাহুল গান্ধী এবার নিজের রাজনৈতিক কৌশলকে সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে উঠে পরে লেগেছেন। দিল্লিতে আম আদমি পার্টির (AAP) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পর, এবার তাঁর নজর পশ্চিমবঙ্গ।

কংগ্রেস বাংলা পরিকল্পনা- ‘একলাচলো রে’ নাকি জোট রাজনীতি?

  • দিল্লীর ভোটে হেরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর এখন মনোযোগ বাংলা কংগ্রেস ২০২৬ নির্বাচন।
  • তৃণমূল বনাম কংগ্রেস রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে উসকে দিতে বাংলায় থাবা বসাতে এবার উদ্যত রাহুল গান্ধী।
  • রাহুল গান্ধী ২০০৪ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই যুব নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বরাবরই তিনি মনে করতেন, কংগ্রেসকে একা লড়তে হবে, জোট নির্ভরশীলতা কমানো উচিত। কিন্তু সেইভাবে কখনই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দাগ কেটে উঠতে পারেননি তিনি।
  • তাঁর মা সোনিয়া গান্ধী যখন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (UPA)-এর রূপকার, তখন রাহুল বিশ্বাস করতেন একক লড়াই-ই দলের ভবিষ্যৎ তৈরি করবে। কিন্তু একের পর এক নির্বাচনে পরাজয়ের পর এবং অবশেষে নরেন্দ্র মোদিকে হারানোর তাগিদে তিনি জোট রাজনীতিতে আপস করেন, যুক্ত হন INDIA জোট-এ।
  • কিন্তু INDIA জোট যুক্ত হয়েও সিঁদুরে মেঘের ভয় কাটল না রাহুল গান্ধীর। আপের চক্রান্তে ফের একঘরে কংগ্রেস। তাই এবার তৃনমূল বনাম কংগ্রেস ক্ষেত্রকে হাতিয়ার করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া রাহুল গান্ধী।
  • ২০২৪ লোকসভা ভোটের পর নয়া হিসাব-নিকাশ কষতে ব্যাস্থ “সোনিয়া পুত্র”। যে আশা নিয়ে রাহুল INDIA জোটে যোগদান করেছে নিজেদের দলকে ক্রমশ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কিন্তু সেখানেও সেগুরে বালি।
  • ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশের পর রাহুল উপলব্ধি করেছেন যে, INDIA জোটের অন্যান্য দলগুলি শক্তিশালী হচ্ছে, কিন্তু কংগ্রেস ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিজেপির বিরুদ্ধে যেখানে সরাসরি লড়াই, সেখানে কংগ্রেস কার্যত হারছে।

তৃণমূল বনাম কংগ্রেস: নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ!

  • দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে AAP-এর বিপর্যয়ের পর সমাজবাদী পার্টি (SP) এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স (NC) কংগ্রেসকেই দায়ী করেছে। কিন্তু এবার কংগ্রেস নিজের অবস্থান বদলাতে চাইছে। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কে হাঁটিয়ে নিজেদের রাজত্ব কায়েম।
  • তৃণমূল বরাবরই কংগ্রেসকে উপেক্ষা করে গেছে এবং স্পষ্ট জানিয়েছে, INDIA জোটের মুখ হতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ। তবে কংগ্রেসও এবার সরাসরি সংঘাতে নামতে প্রস্তুত। সূত্রের খবর, রাজ্যে রাহুল গান্ধীর একটি ‘পদযাত্রা’ আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে।
  • বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থা একেবারেই নড়বড়ে। রাজ্যে কংগ্রেসের কোনো সাংসদ নেই। দলের অন্যতম মুখ অধীর রঞ্জন চৌধুরীও শেষ লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। রাজ্যের সংগঠন প্রায় ভেঙে পড়েছে, নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ চরমে। তৃণমূলের দাপটে কংগ্রেস ধীরে ধীরে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ছে।
  • একদিকে বাংলায় তৃণমুলের দাপট অন্যদিকে, INDIA জোটে রাহুলের একঘরে হওয়া এই অবস্থায় নিজেদের অস্তিত্ব বহাল রাখতে নাকানি চোবানি খাচ্ছে রাহুল গান্ধী। বাংলায় অন্যতম বিরোধী পক্ষও বিজেপিও কোনোভাবেই কংগ্রেসকে যে একটুকরো জমি ছাড়বে না তা তো নিশ্চিত।
  • রাহুল গান্ধীর এখন দেওয়ালে পিঠ থেকে গেছে। এত দিন একলা চলো নীতি নিয়ে চলা রাহুল গান্ধী না পেরেছে রাজনৈতিকতার মাঠে নিজেকে তুলে ধরতে না পারছে ব্যালট বক্সে নিজেদের নামে ভোট ফেলতে।

INDIA জোট করেছে বিশ্বাসঘাতকতা! তবে দমে নেই কংগ্রেস

  • কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা থেকে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদব সবাই কংগ্রেসকে INDIA জোট থেকে বার করতে উদ্যত হয়ে উঠেছে। এই বিষয়ে রাহুল গান্ধী কিছু না বললেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাকি কংগ্রেস নেতারা। তাই মুখে কিছু না বলা কংগ্রেস এবার মন দিয়েছে সেই একলা চলো নীতির উপরেই।
  • ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেস নতুন করে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে। তিনি চান, তৃনমূল বনাম কংগ্রেস আবার প্রচারিত হোক, কংগ্রেস রাজ্যে নতুনভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একচ্ছত্র আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কংগ্রেস ফিরে আসুক বাংলায়। যা অনেকটা গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেলের মত ব্যাপার।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার