Happening Now
Lorem Ipsum is a Dummy Text
সরস্বতী নদী: অভিশাপের কারনে বিলুপ্ত হয়েছিল এই নদী, এত বছর বাদে কি শাপমোচন হল?
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়েছিল এই নদীর তীরে, ঋগ্বেদে উল্লেখিত, অভিশপ্ত বিলুপ্ত সরস্বতী নদীর কি খোঁজ পাওয়া গেছে? ৪০০০ হাজার বছর আগে শুকিয়ে যাওয়া নদীর গতিপথ পাওয়া গেছে। এতদিন বাদে কি অভিশাপ মোচন হল বিলুপ্তপ্রায় এই নদীর?


সরস্বতীর পৌরাণিক ইতিহাস
- পুরান মতে রস্বতী দেবীর নামে এই নদীটি সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার ইচ্ছায় জন্মগ্রহণ করেছিল। মহাভারতে সরস্বতী নদীকে কুরুক্ষেত্র অঞ্চলের পবিত্র নদী হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, সরস্বতী নদীর জল পবিত্র এবং এর মধ্যে স্নান করলে পাপ মোচন হয়।
- সরস্বতী নদী কেবলমাত্র প্রাকৃতিক উৎস নয়, এটি পৌরাণিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতীয় পুরানে এই নদীর ভূমিকা বিশাল ছিল। সরস্বতী দেবীকে হিন্দু ধর্মে বিদ্যার দেবী হিসেবে পূজা করা হয়। সরস্বতী নদীকে এই দেবীর সঙ্গিনী এবং তাঁর আবাসস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
- ঋগ্বেদে সরস্বতী নদীকে "নদীতমা" বা নদীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
- ঋগ্বেদে উল্লেখিত এই নদীটি একসময় হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়ে হরিয়ানা, রাজস্থান এবং গুজরাটের রণ অব কচ্ছ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তবে, প্রায় ৪,০০০ বছর আগে এটি শুকিয়ে যায় বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা।
- এই নদীর প্রবাহপথে ঘগ্গর-হাকরা নদী, যা আজ শুধু একটি শুকনো খাত হিসেবে বিদ্যমান, সরস্বতীর প্রাচীন প্রবাহপথ হতে পারে বলে মনে করা হয়।
- সাঁকরাইল থেকে সমুদ্র পর্যন্ত হুগলি নদী বর্তমানে যে-পথে প্রবাহিত হচ্ছে, তা আদতে সরস্বতী নদীর নিম্নপ্রবাহ বলে মনে করা হয়ে থাকে । এভাবেই, হুগলি নদীর সৌজন্যে সজীব সরস্বতীর নিম্নাংশ। বর্তমানে সরস্বতী নদীর পরিচিতি ত্রিবেণী থেকে সাঁকরাইল পর্যন্তই। হারিয়েছে তার অতীতগৌরব।
কেন হারিয়ে গেল সরস্বতী নদী
- এককালে ভারতে নদীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিল এই সরস্বতী নদী। কিন্তু কালের ফেরে এই নদী শুকিয়ে গেলেও অনেকে বলেন এই নদী আসলে শোকায়নি। মাটির নীচে এখনও বহমান এই নদী।
- বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৪,০০০ বছর আগেই সরস্বতী নদী শুকিয়ে যায়। ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন এবং জলবায়ুর কারণে নদীর উৎস শুকিয়ে(why are you using same word twice in frequency) যায় এবং প্রবাহপথের জল হ্রাস পায়।
- এর ফলে নদীটি শেষ পর্যন্ত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। কিছু গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরস্বতী নদীর জল সম্ভবত যমুনা এবং সিন্ধু নদীর দিকে চলে গিয়েছিল।
- তবে এতো গেল বৈজ্ঞানিক মতে, পুরান মতে এই নদীর শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে অভিশাপের ইতিহাস।
- মহাভারতের যুদ্ধ হয়েছিল সরস্বতী নদীর তীরে। এই ভয়াবহ যুদ্ধে সামিল হওয়া যোদ্ধাদের রক্ত সরস্বতী নদীতে মিশে যেত। একবার ঋষি দূর্বাসা পূজা করতে সরস্বতী নদীর তীরে পৌঁছন। সেইসময়ে নদীতে রক্ত দেখে তাঁর পূজা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ায় তিনি ক্রুদ্ধ হন। তখন তিনি সরস্বতী নদীকে বিলীন হওয়ার অভিশাপ দেন।
- পুরাণ অনুযায়ী, সরস্বতী নদী এখনও ভূগর্ভস্থ ভাবে প্রবাহিত হয়। এদিকে, অনেক গবেষণায় মাটির নিচে প্রবাহিত সরস্বতী নদীর প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুরাণে লেখা আছে যে, বিষ্ণুর কল্কি অবতারের সময়ে সরস্বতী নদী ফের আবির্ভূত হবে। তাই এটাই হল ভারতের প্রথম নদী, যা আজও অভিশাপ ভোগ করছে।
ভূগর্ভস্থ সরস্বতীর কি সম্ভাবনা আছে?
- সাম্প্রতিক গবেষণায় স্যাটেলাইট চিত্র এবং ভূতাত্ত্বিক প্রমাণের মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, সরস্বতী নদীর প্রাচীন প্রবাহপথের নিচে এখনও ভূগর্ভস্থ জলধারা থাকতে পারে। হরিয়ানা সরকার এই নদী পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছিল খনন কার্যক্রম এবং জলাধার নির্মাণ।
- ২০১৬ সালে, যমুনানগরের উঁচা চাঁদনা গ্রামে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর শুকনো খাতে ১০০ কিউসেক জল প্রবাহিত করা হয়েছিল।
- বর্তমানে স্যাটালাইট ছবি, ও গবেষণা করে এটাই দেখা যাচ্ছে হয়ত সুদূর ভবিষ্যতে পুনরায় মাটির উপর প্রবাহিত হবে এই নদী। তখনই হয়ত প্রবাহিত হবে যখন দুর্বাসা মুনির শাপ কেটে যাবে সরস্বতী নদীর উপর থেকে।




ব্রডকাস্ট চ্যানেল







ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার











Copyright © All Rights Reserved by Truee News Bangla is a copyright property of Independent Media Corp