SIR চাপে জলপাইগুড়িতে ফের এক BLO-র মর্মান্তিক মৃত্যু

জলপাইগুড়ির মালবাজারে ভোরের আলো ফোটার আগেই যেন অশনি সংকেত নেমে এল। বাড়ির উঠোনে ঝুলন্ত দেহ, চারদিকে হতভম্ব নীরবতা। শান্তিমুনি এক্কা—অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, BLO, আর SIR-এর চাপে বিপর্যস্ত এক মা। পরিবার বলছে, কাজের ভয় আর মানসিক চাপেই সব শেষ।

মালবাজারে BLO-র মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র আলোড়ন!

• শান্তিমুনি এক্কার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর পুরো চা-বাগান এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়।
• পরিবারের দাবি অনুযায়ী SIR কাজের অতিরিক্ত মানসিক চাপ প্রতিদিন বাড়ছিল বলে তিনি এক ধরনের অসহায় অবস্থায় দিন কাটাতেন।
• স্থানীয়রা জানান শান্তিমুনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং কাজের চাপ সামলাতে পারছিলেন না বলে বারবার অভিযোগ করেছিলেন।
• গ্রামের মানুষের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের অমানবিক কাজের চাপ সাধারণ কর্মীদের জীবনে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে যা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
• ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনা বাড়ে এবং বহু মানুষ জমায়েত হয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন।
• SIR আতঙ্ক এখন এলাকাজুড়ে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

পরিবারের বিস্ফোরক অভিযোগে চাপে প্রশাসন!

• শান্তিমুনির ছেলে ডি সুজা এক্কা জানান তাঁর মায়ের উপর চাপানো কাজ ছিল অমানবিক এবং তিনি বাংলা লিখতে না পারায় আরও কষ্ট হত।
• পরিবার দাবি করেছে তাঁর বারবার আবেদন সত্ত্বেও কোনও আধিকারিক সাহায্য করেননি এবং তাঁকে একই পরিমাণ কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
• স্বামী সুখু এক্কা বলেন প্রশাসনের উদাসীনতা ও মানসিক চাপই তাঁর মেয়ের মৃত্যুর আসল কারণ এবং তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
• পরিবারের সদস্যরা জানান মায়ের মানসিক অবসাদ দিনদিন বাড়ছিল এবং বিষণ্ণতা চরমে পৌঁছানোর পর এই পরিণতি ঘটে।
• তাঁরা অভিযোগ করেন আধিকারিকদের কঠোর মনোভাব ও সাহায্যের অভাব তাঁর জীবনকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছিল দীর্ঘদিন ধরে।
• পরিবারের দাবি এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার উপর কঠোর তদন্ত হওয়া জরুরি এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া উচিত।

SIR আতঙ্কে গ্রামাঞ্চলে অস্বাভাবিক চাপ বাড়ছে!

• এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন SIR কাজের বোঝা সাধারণ কর্মীদের দৈনন্দিন জীবনে ভয়ঙ্কর চাপ সৃষ্টি করছে এবং প্রত্যেকেই ভীত পরিস্থিতিতে রয়েছেন।
• বহু BLO জানাচ্ছেন কাজের পরিমাণ এতটাই বেশি যে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
• প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে এবং ভুল হলে কঠোর শাস্তির হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
• গ্রামাঞ্চলে BLO দের নিয়মিতভাবে কাজের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে এবং রাতবিরেতেও ফোনে নির্দেশ আসছে বলে জানা গেছে।
• অনেকেই বলেন SIR এমনভাবে চাপানো হয়েছে যে সাধারণ কর্মীরা বুঝতেই পারছেন না কীভাবে এটি সামলাবেন।
• এলাকার সাধারণ মানুষের মতে প্রশাসন পুরো প্রক্রিয়া পরিকল্পনা ছাড়াই চালাচ্ছে ফলে পরিণতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে।

মন্ত্রীর ক্ষোভে তীব্র সমালোচনার ঝড!

• বুলু চিক বড়াইক সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে বলেন চরম মানসিক চাপই BLO মৃত্যুর জন্য মূল কারণ হিসেবে সামনে এসেছে।
• তিনি অভিযোগ করেন একের পর এক আত্মঘাতী ঘটনা ঘটলেও কমিশন অমানবিকভাবে কাজের চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে কোনও সমাধান ছাড়াই।
• মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং বহু মানুষ তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন।
• তিনি বলেন SIR আতঙ্কে সাধারণ ভোটার থেকে BLO সকলেই অসহায় ও বিপর্যস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
• তাঁর মন্তব্যে প্রতিবেশী এলাকাগুলির বাসিন্দারাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
• মন্ত্রীর মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পূর্ব বর্ধমানের আগের মৃত্যুর ঘটনাও তুলছে প্রশ্ন!

• কয়েকদিন আগেই নমিতা হাঁসদার মৃত্যু হওয়ায় SIR চাপ নিয়ে আগেই উদ্বেগ বেড়েছিল এবং নতুন ঘটনা সেই ভয় বাড়াচ্ছে।
• নমিতা হাঁসদা হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোকে মারা যাওয়ায় সহকর্মীরা দাবি করেন কাজের চাপ তাঁর স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
• দুটি জেলা মিলিয়ে পরপর BLO মৃত্যুর ঘটনা প্রশাসনের কাজের ধরণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে।
• পরপর এমন মৃত্যু প্রমাণ করছে কর্মীদের জন্য কোনও মানসিক সহায়তার ব্যবস্থা নেই এবং চাপ অত্যধিক।
• বিশেষজ্ঞরা বলছেন SIR এর গতিপথ ও পরিকল্পনা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ এবং এতে কর্মীদের ঝুঁকি বাড়ছে।
• BLO মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসনের প্রতি আস্থা ক্রমেই কমছে বলে মনে করছেন অনেকে।

প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্ন তুলছে আরও বড় ব্যর্থতা!

• মালবাজারের BDO ঘটনাস্থলে গেলেও সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি যা সন্দেহ আরও গভীর করছে।
• প্রশাসনের নীরবতা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়িয়েছে এবং তাঁরা মনে করছেন সত্যিটা লুকোনোর চেষ্টা হচ্ছে।
• স্থানীয়দের দাবি এতগুলি মৃত্যু সত্ত্বেও কোনও রিভিউ মিটিং বা সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে না।
• প্রশাসন যদি প্রথম থেকেই সতর্ক ব্যবস্থা নিত তাহলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করা যেত বলে অনেকের মত।
• মানুষ বলছেন নীরবতা প্রমাণ করছে প্রশাসন নিজেদের দায় এড়াতে চাইছে এবং কর্মীদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
• নীরব ভূমিকা পুরো SIR প্রক্রিয়াকে আরও বিতর্কিত করে তুলছে এবং মানুষের অসন্তোষ বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্রুত।

Editor’s Note

এই ঘটনার পর স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে—SIR নামের ঝড়টা মাঠে নেমেছে কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই, আর তার ধাক্কা সামলাতে না পেরে একের পর এক BLO ভেঙে পড়ছেন নিঃশব্দে। কাজের চাপে মানুষ হারাচ্ছে মানসিক স্থিরতা, আর প্রশাসন যেন কোনও অদৃশ্য দেওয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে নিস্তব্ধ। একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, যিনি বাংলা লিখতে পড়তেই পারতেন না, তাঁকে জোর করে এমন কাজ থোপা—এটা কি উন্নয়নের ভাষা, নাকি নিছক দায়সারা মনোভাব? আর মৃত্যুর পরই শুধু বড়বড় কথা, কিন্তু জীবনের সময়টুকুতে সহায়তার হাত কোথায় ছিল? এই নীরবতা, এই উদাসীনতা কি আর চলতে দেওয়া যায়?