০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Trump Administration: Kash Patel, the New FBI Chief

আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের নৃতত্বে প্রথমবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ক্যাশ প্যাটেল

কাশ প্যাটেল, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বস্ত সমর্থক, তাকে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন -এর পরিচালক হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে, মার্কিন সেনেট ভোটে জয়লাভের পরI

এফবিআই পরিচালক হিসেবে কাশ প্যাটেল,‘সবচেয়ে বড় সম্মান’ বলে অভিহিত করলেন কিন্তু রিপাবলিকানরা কী বলেছেন?

  • ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ কাশ প্যাটেল ভগবদ্গীতার ওপর হাত রেখে শপথ নেন এফবিআই পরিচালক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং দেশটির শীর্ষ ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগকে তাঁর জীবনের “সবচেয়ে বড় সম্মান” বলে অভিহিত করেন। তিনি
  • প্যাটেলের মনোনয়ন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অন্যতম বিতর্কিত মনোনয়নের মধ্যে ছিল, জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে তুলসি গ্যাবার্ড এবং স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগের প্রধান হিসেবে রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে। এমনকি কিছু রিপাবলিকানও এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত তাদের বেশিরভাগই সমর্থনে একত্রিত হন।
  • প্যাটেল একজন সাবেক পাবলিক ডিফেন্ডার, যিনি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ওয়াশিংটন ডিসির ক্ষমতার কাঠামোতে অত্যন্ত দ্রুত উত্থান দেখেছেন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি প্রতিরক্ষা বিভাগের চিফ অব স্টাফ এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উপপরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি লাভ করেন।
  • যদিও আলাস্কার রিপাবলিকান সেনেটর লিসা মার্কোস্কি এবং মেইনের সুসান কলিন্স মনোনয়নের বিরোধিতা করেছিলেন, প্যাটেল বাকি রিপাবলিকান পার্টির সমর্থন পান। এর মধ্যে ছিলেন সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা মিচ ম্যাককনেল, যিনি এর আগে ট্রাম্পের অন্যান্য মনোনীতদের বিরোধিতা করেছিলেন। নিয়োগ অনুমোদন সংকীর্ণ ব্যবধানে ৫১-৪৯ ভোটে পাস হয়, কারণ সকল সিনেট ডেমোক্র্যাট তার বিপক্ষে ভোট দেন।
  • প্যাটেল এজেন্সির নবম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, ক্রিস্টোফার রে-এর স্থলাভিষিক্ত হয়ে ঘোষিত ১০ বছরের মেয়াদে। তবে, তাঁর আগের দুই পূর্বসূরির মেয়াদ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়েছিল। রে তার মেয়াদের দুই বছর বাকি থাকতে ট্রাম্পের নির্বাচনের পর পদত্যাগ করেন, আর জেমস কমি ১০ বছরের মেয়াদের মাত্র চার বছর পূর্ণ করার আগেই ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে বরখাস্ত হন।

এফবিআই পরিচালকে প্রথম সতর্কবার্তা

  • প্যাটেল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে তাঁদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এফবিআইয়ের প্রতি জনগণের বিশ্বাস পুনরুদ্ধারে তাঁর অঙ্গীকারের ওপর জোর দেন।
  • এক্স-এ একটি পোস্ট শেয়ার করে প্যাটেল বলেন ‘বিউরোর নিবেদিতপ্রাণ নারী-পুরুষ এবং আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে, আমরা এমন একটি এফবিআই গড়ে তুলবো, যার ওপর আমেরিকার জনগণ গর্ব করতে পারে। আর যারা আমেরিকানদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে—এটাই তোমাদের সতর্কবার্তা। আমরা পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে তোমাদের খুঁজে বের করবো। মিশন সবার আগে। আমেরিকা সর্বদা।‘
  • প্যাটেল আরও প্রতিশ্রুতি দেন যে, তাঁর মেয়াদকালে এফবিআই-এর ভেতরে ও বাইরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবেন। তিনি আরও জানান যে, এই সপ্তাহান্ত থেকে "কঠোর সাংবিধানিক নজরদারি" শুরু হবে।
  • এছাড়াও, আমেরিকান গণমাধ্যমকে কটাক্ষ করে প্যাটেল উল্লেখ করেন যে, তিনিই তাদের ‘লক্ষ্যবস্তু’ এবং অভিযোগ করেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে "ভুয়া, বিদ্বেষপূর্ণ, মানহানিকর এবং অপবাদমূলক" লেখা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, "আমি জানি যে গণমাধ্যম এখানে উপস্থিত রয়েছে। যদি আপনাদের কোনো লক্ষ্য থাকে, তাহলে সেটি আমি (নিজের দিকে ইঙ্গিত করে)। এটি এফবিআই-এর পুরুষ ও নারীরা নয়। আপনারা আমার সম্পর্কে যা কিছু সম্ভব, তা লিখেছেন—সবই ভুয়া, বিদ্বেষপূর্ণ, মানহানিকর এবং অপবাদমূলক। চালিয়ে যান, আরও লিখুন, তবে এফবিআই-এর পুরুষ ও নারীদের এর বাইরে রাখুন। তারা এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য।"
  • দেশজুড়ে অপরাধের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করে, প্যাটেল আশ্বস্ত করেন যে তার প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, “গত বছর এক লক্ষ মানুষ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, এক লক্ষ মানুষ সিসিপি ফেন্টানিল ওভারডোজ এবং হেরোইনের কারণে মারা গেছে, ১৭ হাজার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সহিংস অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আমরা এমন একটি আমেরিকা থাকতে দিতে পারি না, যেখানে এটি স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। যেখানে প্রতি ৩০ মিনিটে একজন মারা যায়, প্রতি সাত মিনিটে কেউ অতিরিক্ত মাদক সেবনে প্রাণ হারায়, এবং প্রতি ছয় মিনিটে একজন ধর্ষণের শিকার হয়—এটা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না।”

ব্যক্তিগত দীর্ঘশ্বাস

  • কাশ্যপ "ক্যাশ" প্যাটেল একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান আইনজীবী এবং সরকারি কর্মকর্তা, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
  • তিনি নিউ ইয়র্কের গার্ডেন সিটিতে ১৯৮০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামাতা গুজরাটের ভদ্রাণ গ্রামের পাটিদার বংশোদ্ভূত, যারা পূর্বে উগান্ডা ও তানজানিয়ায় বসবাস করতেন। উগান্ডায় ইদি আমিনের শাসনামলে জাতিগত নিপীড়নের কারণে তারা প্রথমে কানাডা এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন করেন।
  • প্যাটেল গার্ডেন সিটি হাই স্কুল থেকে স্নাতক শেষে ২০০২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ রিচমন্ড থেকে ইতিহাস ও অপরাধ বিচার বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ২০০৫ সালে পেস ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ ল থেকে জুরিস ডক্টর ডিগ্রি এবং ২০০৪ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করেন।
  • তার কর্মজীবনের শুরুতে প্যাটেল ফ্লোরিডায় পাবলিক ডিফেন্ডার হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক মাদক পাচার, হত্যা, অস্ত্র আইন লঙ্ঘন এবং নগদ অর্থ পাচারের মামলায় অভিযুক্তদের প্রতিনিধিত্ব করেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগে প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেন এবং ২০১৭ সালে হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটিতে সন্ত্রাসবিরোধী সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।
  • প্যাটেল ২০২৩ সালের শুরু থেকে কান্ট্রি মিউজিক শিল্পী ও রক্ষণশীল রাজনৈতিক ভাষ্যকার আলেক্সিস উইলকিন্সের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। তার এফবিআই পরিচালক পদে শপথ গ্রহণের সময় তিনি ভগবদ্গীতা হাতে শপথ নেন, যা উইলকিন্স ধরে রেখেছিলেন।
  • প্যাটেল ওয়াশিংটন ডিসি এবং নেভাদায় বসবাস করেন। তিনি আইস হকি খেলা পছন্দ করেন এবং এই খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও, তিনি বিভিন্ন পডকাস্টে নিয়মিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হনI

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার