০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Once Again ED Investigates Anubrata Mandal on Cattle Smuggling Case

গরু পাচারের দুর্ভোগ পেছন ছাড়ছে না কেষ্টর, উদ্ধার আরও কয়েককোটি টাকা

গরু পাচার মামলায় ফের অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আপাতত, অনুব্রত, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং সহযোগী সংস্থাগুলির নামে থাকা বেশ কিছু স্থাবর সম্পত্তি প্রাথমিকভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

শান্তি নেই কেষ্টর! ইডির কবলে একাধিকবার

  • গ্রেপ্তার হলেন গরু পাচার মামলায়, পেলেন জামিন একবছর কাটালেন জেলে। কিন্তু তাতেও শান্তি নেই বাংলার কেষ্টর। ‘খেলা হবে’ বচন দিয়ে এখন নিজেই খেলতে খেলতে ক্লান্ত কেষ্ট ওরফে অনুব্রত মণ্ডল, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।
  • গরু পাচার মামলার কাঁটা এখনও পেছন ছাড়েনই অনুব্রত মণ্ডলের। ফের কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল ইডি।
  • তবে এবার ইডির নিশানা শুধু অনুব্রত নয়, তার সাথে জড়িত আত্মীয়পরিজনও।
  • ইডি-র পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে অনুব্রতদের নামে থাকা মোট ৩৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা রয়েছে ২৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকারও বেশি অর্থ।
  • এছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু স্থাবর সম্পত্তিও।
  • সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তার ভিত্তিতেই গরু পাচার নিয়ে মামলা শুরু করেছিলো ইডি।
  • তদন্তে উঠে আসে অনুব্রত মণ্ডলের নাম, ব্যাংক থেকে উদ্ধার হয় কোটি টাকার সম্পত্তি এমনকি এখনও সেই বিপুল সম্পত্তি উদ্ধার করে চলেছে ইডি।
  • সেই তদন্তেই নাম জড়ায় অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলেরও। এমনকি তাদের আত্মীয় পরিজনের অ্যাকাউন্টেও আসত টাকা।
  • শুধু তাই নয় অনুব্রতর বডিগার্ড সেহগল হোসেনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও মিলেছিল টাকা, এমনকি গ্রেপ্তারও করা হয় তাকে।
  • এই সেহগল হোসেনের হাত দিয়েই নাকি এনামুল হক টাকা পাঠাতেন কেষ্টর (অনুব্রতের) কাছে।
  • ইডি-র তথ্য অনুযায়ী, গরু পাচার মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট ৫১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই বিপুল সম্পদের হদিস মেলার পর অনুব্রতের বিরুদ্ধে মামলা আরও জোরালো হচ্ছে।
  • জামিনে নিজের বাড়িতে বসে থাকা কেষ্টর আবার শ্রীঘরে না ঠাই হয় সেটাই দেখার।

কেমন ছিল অনুব্রতর জেল সফর?

  • ২০২২ সালের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
  • এরপর একাধিক জেল ঘুরে অবশেষে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। গ্রেপ্তারের আগেও যেমন ছিলেন দাপুটে তেমনি জেলে বসেও নিজের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছিলেন তিনি।
  • এমনকি জেলে বসেও, গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত এনামুল হক-সহ একাধিক ঘনিষ্ঠের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ তুলেছিল সিবিআই। কলকাতা হাই কোর্টে তাঁর জামিনের শুনানিতে সিবআই দাবীও করেছিল, অনুব্রত নিজের মেজাজ জেলেও বজায় রাখছে , চেষ্টা করছেন প্রভাব খাটানোর ।
  • প্রথমে কেষ্টকে রাখা হয়েছিলো আসানসোল সংশোধনাগারে। পরে ইডির মামলায় তিহাড় জেলে ঠাই হয় তার। এরপর ২০২৩ সালের ২১ মার্চ থেকে তিহাড়েই জেলবন্দি অবস্থায় ছিলেন তিনি।
  • এরপর ২০২৩ সালে ওই গরু পাচার মামলাতেই অনুব্রতর কন্যা সুকন্যাকেও গ্রেফতার করে ইডি। তাঁরও ঠাঁই হয়েছিল তিহাড় জেলে বাবার পাশেই। অবশেষে গত বছর সেপ্টম্বরের ২০ তারিখ জামিন পান অনুব্রত।
  • অবশ্য বাবার আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন কন্যা সুকন্যা।
  • কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই বলেছিল, কেষ্ট (অনুব্রতের ডাকনাম) এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী, এমনকি তাঁকে ‘রাজনৈতিক দৈত্য’ বলেও উল্লেখ করা হয় আদালতে।
  • এখানেই ক্ষান্ত হয়নি কেষ্ট! সিবিআইয়ের আইনজীবী ডিপি সিংহ আদালতে দাবি করেছিলেন, আসানসোল জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেও অনুব্রত মণ্ডল এনামুল হকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।
  • এনামুল এই মামলার মূল অভিযুক্তদের একজন। সিবিআইর দাবি, ফেসটাইমের মাধ্যমে অনুব্রতের সঙ্গে এনামুলের কথোপকথন হয়েছে।
  • তাহলে প্রশ্ন আসে কি করে জেলে এত স্বাধীনভাবে থাকতেন ‘কেষ্ট’?

ঘরে ফিরেই রাজনীতিতে ফের সক্রিয় অনুব্রত!

  • জেল থেকে বেরিয়ে সবে বীরভূমে পা রেখেছেন অনুব্রত। এখনও নিজের স্থান সেইভাবে পাকাপোক্ত হয়নি তার মধ্যেই এই আবহে আবার বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি।
  • সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন তিনি। সামনেই ২০২৬ বিধানসভা ভোট তার আগেই নিজেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা কেষ্টর।
  • কেষ্টর উপর অগাধ আস্থা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে ফের পুরনো দ্বন্দ্ব অস্বস্তি বাড়িয়েছে কেষ্টর। বীরভূম জেলা পরিষদ ঠিকমতো কাজ করছে না বলে তোপ দেগেছিলেন অনুব্রত।
  • কিন্তু ইডির হুটহাট হামলা সামলে কতটা বিধানসভা ভোটের জন্য অনুব্রত নিজেকে তৈরি করতে পারছেন তাতো ২০২৬ এই বোঝা যাবে।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার