০৬ জানুয়ারি ২০২৫

জলের তলায় মানকানালি সেতু, ২৫ গ্রাম বিচ্ছিন্ন—গান্ধেশ্বরীর ক্রোধে বিপর্যস্ত বাঁকুড়া

ভারতের বর্ষা উপমহাদেশের আবহাওয়া, কৃষি ও দৈনন্দিন জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, জলসম্পদ পুনর্ভরায়ণ ও কৃষি সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ।

গান্ধেশ্বরীর ভয়াল জলধারা, বিপর্যস্ত বাঁকুড়া—টিকে থাকা কতদিন?
  • পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার প্রায় ২৫টি গ্রামের সাথে সংযোগকারী মানকানালি সেতুটি সম্পূর্ণভাবে জলের তলায়| তীব্র স্রোতের কারণে সেতুটি বর্তমানে ৩ থেকে ৪ ফুট পানির নিচে ডুবে রয়েছে।
  • হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত, বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবা পাচ্ছেন না।
  • গত দুই দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে গান্ধেশ্বরী নদী উপচে পড়েছে। বুধবার থেকে নদীর জলের তীব্র স্রোত সরাসরি সেতুর উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
  • বাঁকুড়ার সঙ্গে মানকানালি ও আশপাশের গ্রামগুলোকে যুক্তকারী প্রধান রুটে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ।জরুরি অবস্থায় বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের—যার দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার বেশি।
  • স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন— “সেতুটি পানির নিচে। জরুরি প্রয়োজনে বেরোনোর উপায় নেই।” স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য বাঁকুড়া শহরের উপর নির্ভরশীল গ্রামগুলো এখন কার্যত সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
  • হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এলাকাজুড়ে ভয় ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এসে শক্তিশালী সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ— “কোনও কাজ হয় না, প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতিই থেকে যায়।”
প্রশাসনের বার্ষিক প্রতিশ্রুতি—মজবুত সেতু কোথায়?
  • গত বছর অস্থায়ী স্বস্তি দিয়েছিল মানকানালি সেতু। ইটভাটা মালিকদের উদ্যোগে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সেতুটি সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছিল।কিন্তু চলতি বর্ষায় অবিরাম বৃষ্টিপাতে ফের ধসে পড়েছে সেই দুর্বল কাঠামো।ফলস্বরূপ, এলাকাটি আবারও জলের তলায় ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
  • বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানোও চরম কঠিন হয়ে উঠেছে।কোনও সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই, ফলে জরুরি পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত।
  • ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD) জানিয়েছে, ২০ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
  • পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃষ্টির সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রপাত, বিদ্যুৎ চমকানো এবং দমকা হাওয়া। হাওয়ার বেগ থাকতে পারে ৪০ থেকে ৫০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত, যা বিপদের মাত্রা আরও বাড়াতে পারে।
Editor’s Note
  • বন্যাকবলিত সেতু থেকে বিচ্ছিন্ন গ্রাম—বর্ষার প্রাক্কালে স্পষ্ট হচ্ছে অবকাঠামোগত ফাঁকফোকর। সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও টেকসই পরিকল্পনা আর বিলাসিতা নয়, এখন রাজ্যের জন্য চরম প্রয়োজন।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার