Happening Now
2026 Bengal Polls: Tapasi Mandal Makes Political Switch
হলদিয়ার দুবারের বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন, অধিকারীর ঘরের মাটিতে ধাক্কা!
সব জল্পনার অবসান করে অবশেষে বিজেপি ছেড়ে তৃনমূলে যোগদান তাপসী মণ্ডলের, শুরু রাজনৈতিক তরজা। দল পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তাপসী মণ্ডল অবশ্য বিজেপির "বিভেদ সৃষ্টিকারী" নীতিকে দায়ী করেছেন।


"তুমিও, ব্রুটাস?"- শুভেন্দুর বিশিষ্ট ওড়ালেন তৃণমূলের পতাকা!
- এ যেন দুই পারের লড়াই। শুভেন্দুর গড়ের অপর পারেই ছিল তাপসীর গড়। এবার সেই গড়ের মালকিন করেছেন দল বদল, যোগ দিয়েছেন রাজার দলে তৃনমূলে।
- পূর্ব মেদিনীপুরের প্রভাবশালী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন এবং সেটা তিনি করলেন ভোটের ঠিক এক বছর আগে।
- এটা তো একেবারে রাজনৈতিক ইউ-টার্নের ক্লাসিক উদাহরণ, তাই না? কয়েকদিন আগেই তপসী মণ্ডল তৃণমূলকে "দুর্নীতির আখড়া" বলে সমালোচনা করেছিলেন, আর এখন তিনিই সেই দলে যোগ দিয়ে তাদের শাসনব্যবস্থা ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করছেন। যাঁর পদত্যাগ একসময় তিনি দাবি করেছিলেন, এখন সেই মুখ্যমন্ত্রীই তাঁর মতে রাজ্যে প্রগতিশীল কাজ করছেন!
- তাপসীর দলবদলের প্রতিবাদে হলদিয়ায় জনসভা করবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু ও বিজেপি শিবিরের মতে, এটি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
- শুভেন্দু অধিকারীর কথায় ২০২১ এ নাকি মূড়ি মুড়কির মতন দলে লোক টানা ভূল ছিল এবং । জনগণের কথা মেনে নেওয়া উচিত ছিল।
- শুভেন্দু ছাড়াও বিজেপির একঝাক নেতা আক্রমণ করেছে তাপসীকে।
অসন্তুষ্ট তপসী মণ্ডল
- শাসক দলে আনন্দঘন পরিবেশে যোগ দিয়ে, তাপসী মণ্ডল তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন বিজেপি ত্যাগ করার পেছনে। প্রথমত, বিজেপি ‘চরম বিভাজনের রাজনীতি’ করছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে তিনি একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কেউ শোনেনি।
- দ্বিতীয়ত, বিজেপি অপ্রয়োজনীয় পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি, যা তাপসীকে কোণঠাসা করে রেখেছিল। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর তমলুকের সাংসদ এবং প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন। "গঙ্গোপাধ্যায়কে বিজেপির বাইরে থেকে এনে প্রার্থী করা হয়েছে, অথচ তিনি দলের কারও সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি," বলেন তাপসী। এমনকি তাপসী দল ছাড়ার পর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘জঞ্জাল এবার ভাগাড়ে গেছে!’
- তৃতীয়ত, তাপসী মণ্ডল স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি হালদিয়ায় কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছিলেন না; বরং কারখানা ও মিলগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং নতুন কোনো ব্যবসায়িক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
- বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই বড় দায়িত্ব পেয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দফতরের চেয়ারপার্সন পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বিরোধী শিবিরের একাংশের দাবি, এটি তাঁর দলবদলের ‘পুরস্কার’ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
- তাপসী নিশ্চিত, টিকিট দিলে যেভাবে হোক জিতব। দলের মুখ রক্ষা করার দায়িত্ব ওনার।
- প্রশ্ন উঠছে—তাহলে কি তাঁর আগের সমালোচনা শুধুই একটা দর-কষাকষির কৌশল ছিল? নাকি হঠাৎ করেই তৃণমূলের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁর ধারণা বদলে গেল? যাই হোক না কেন, সাধারণ মানুষ এত সহজে এধরনের মোড় পরিবর্তনকে মেনে নেন না। আপনার কী মত, তিনি কি জনতার কাছে নিজের এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে পারবেন?
বিজেপি বিদ্যুৎগতিতে তাদের বিধায়কদের দলছুট হতে দেখছে
- বিজেপি প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও, তারা সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিলেও, উভয় আসনেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হয়। এর মধ্যে একটি উত্তরবঙ্গের মাদারিহাট এবং অপরটি জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি আসন।
- বিজেপির একাধিক বিধায়ক ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ২০২১ সালের পর তৃণমূলে ফেরা মুকুল রায়, তন্ময় ঘোষ, হরকালী প্রতিহার, সুমন কাঞ্জিলাল, বিষ্বজিৎ দাস এবং কৃষ্ণ কল্যাণী।
- এ নিয়ে জল্পনা চলছে যে কার্সিয়াং-এর বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণু প্রসাদ শর্মা পরবর্তী দলত্যাগী হতে পারেন। তিনি পাহাড়ের ‘বিশেষ মর্যাদা’ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে প্রয়োজনে দল ছাড়তে পারেন। তবে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়, কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৃথক রাজ্যের বা বিশেষ মর্যাদার দাবির পক্ষে নন।
- অন্যদিকে, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় একবার তৃণমূলে গিয়ে পরে বিজেপিতে ফিরে এলেও, তার রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌমেন মূলত কোচবিহারের রাজবংশী নেতা আনন্দ মহারাজের অনুগত। বিজেপির একাংশের দাবি, ২০২১ সালে আনন্দ মহারাজের সুপারিশেই সৌমেন কালিয়াগঞ্জ থেকে টিকিট পেয়েছিলেন। কিন্তু যখন আনন্দ মহারাজের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কের অবনতি ঘটে, তখন সৌমেন তৃণমূলে যোগ দেন। পরে আনন্দ মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানোর পর সৌমেন বিজেপিতে ফিরে আসেন। তবে বর্তমানে আনন্দ এবং বিজেপির সম্পর্ক ফের অস্বস্তিকর অবস্থায় পৌঁছেছে।
ফিরে দেখা
- তাপসী মণ্ডল তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সিপিআই(এম) এর হাত ধরে।
- ২০১৬ সালে সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসেবে হালদিয়া থেকে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মণ্ডল। চার বছর পর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় এই আসন থেকে জয়ী হন, যেখানে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের স্বপন নস্করকে ১৫,০০০-এর বেশি ভোটে পরাজিত করেন।
- ২০২১ সালে সিপিএম থেকে বেরিয়ে যান তাপসী মণ্ডল। ঐ একই সময়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু।
- ফলে দুই জনের মধ্যে একটা রাজনৈতিক ঘনিস্ততা ছিলই কিন্তু এবার সেই ঘনিস্ততাতেই ভাঙ্গন এসেছে।
- ২০২১ সালের বিধানসভা এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে বড় ব্যবধানে হারালেও, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছিল বিজেপির অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি।
- এই জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলার নন্দীগ্রাম আসনে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।




ব্রডকাস্ট চ্যানেল







ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার











Copyright © All Rights Reserved by Truee News Bangla is a copyright property of Independent Media Corp