০৬ জানুয়ারি ২০২৫

আর জি কর রেপ কেসঃ সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন, তৃণমুলের জয়

আর জি কর ধর্ষন কাণ্ডের সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন রায় দিয়েছে কোর্ট। এই রায় নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, যেখানে টিএমসি এবং সিবিআই মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছে।

রায় নিয়ে বিতর্ক

  • গত বছর আগস্ট মাসের ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল পুরো বিশ্ব। ৩১ বছর বয়সী এক প্রশিক্ষণরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার কাণ্ডে তোলপাড় শুরু হয়।
  • ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের একটি সেমিনার কক্ষে ওই চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়, যা প্রাথমিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যার ইঙ্গিত দেয়। এই নৃশংস ঘটনার পর দেশজুড়ে নারীদের সুরক্ষা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু হয়। চিকিৎসক সমাজও নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়।
  • এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে আন্দলনে সামিল হয় সমগ্র পশ্চিমবাংলা। চিকিৎসকরা ধর্ষকের ফাঁসি ও এই ঘটনার নেপথ্যে কারা আছেন তার জন্য চরম আন্দোলন শুরু হয়,দাবী ছিল একটাই – দোষীদের ধরতে হবে দিতে হবে উচিত শাস্তি। অবশেষে রায় দিয়েছে শিয়ালদা কোর্ট কিন্তু এই রায়ে খুশি নয় কেউ।
  • আর জি কর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় ছিল রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ জনগণ। এই ঘটনায় একমাত্র দোষী সাব্যস্ত করা হয় সিভিক পুলিশ সঞ্জয়কে রায়কে। দোষী ধরার পর থেকেই ফাঁসির সাজা নিয়ে রাস্তায় নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআই কে।
  • কিন্তু সিবিআই ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভয়ার মা বাবা খুশি নন এই রায় নিয়ে। সঞ্জয় রায়, যিনি একজন পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন, তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে।
  • তবে, বিচারক অনির্বাণ দাস এই মামলাকে "বিরল থেকে বিরলতম" (rarest of rare) হিসেবে গণ্য না করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান থেকে বিরত থাকেন। বিচারকের মতে, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োজনীয়তা নেই। আর এই নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। অনেকের মতেই কিভাবে এতো নৃশংস ঘটনাকে বিরলতম ঘটনা বললেন না বিচারক?

ঘটনায় জরিত তৃণমূল ও সিবিআই ?

  • আর জি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই যাকে কাঠগড়ায় দাড় করানো হয়েছে তা হল কলকাতা পুলিশ। অভয়ার শরীর সৎকার থেকে তথ্য প্রমাণ লোপাট সবেতেই সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছে কোলকাতা পুলিশ। কিন্তু কেন ? এখানেই লুকিয়ে রহস্য।
  • তাহলে কোলকাতা পুলিশ কাকে বাঁচাতে চাইছে? বাংলার সরকারকে? এই ঘটনায় জেল হেপাজতে নেওয়া হয় আর জি কর হাসপাতালের হেড সন্দীপ ঘোষকে। কিন্তু কিছুদিন পরেই ছারা পান তিনি।
  • তথ্য অনুযায়ী যে ভাবে অভয়ার মৃত্যু হয়েছে তা কোনোভাবেই শুধু মাত্র সঞ্জয়ের পক্ষে সম্ভব না। তাহলে? আর কাউকে কেন ধরতে পারল না কোলকাতা পুলিশ?
  • নষ্ট করা হয়েছে তথ্য প্রমাণ, স্যাম্পেল রাখা হয়নি ঠিকভাবে এমন হাজার অভিযোগ উঠেছে কোলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে। এই একই অভিযোগ উঠছে সিবিআইএর বিরুদ্ধেও। ঠিক মতো তদন্ত করেনি সিবিআই দাবী অভয়ার মা বাবার।

ভবিষ্যতের পদক্ষেপ

  • এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে আপিল করার পরিকল্পনা করছে। তাদের লক্ষ্য সঞ্জয় রায়ের জন্য মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা। এদিকে, সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
  • অন্যদিকে সিবিআইএর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবে অভয়ার মা বাবা। এতো বড় ঘটনাকে কিভাবে এতো সহজে শুধু একজনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত?
  • এতো বিদ্রোহ, আন্দোলন কি তাহলে সত্যি বিফলে গেল? বাংলার একটা মেয়ের সাথে এতো নৃশংস ঘটনা ঘটে সব দোষী শাস্তি না পায় তাহলে ভবিষ্যতে মেয়েদের সুরক্ষা কি হবে তা নিয়ে এক বিরাট প্রশ্ন রয়ে গেল।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার