০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Lorem Ipsum is a Dummy Text

সংকটে সাইফ আলি খানের ₹১৫,০০০ কোটি টাকার পৈত্রিক সম্পত্তি

১৯৬৮ সালের শত্রু সম্পত্তি আইনের চক্করে পোতৈাদী পরিবার। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট ২০১৫ সালে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে, যার ফলে বিপাকে পোতৈাদী পরিবার।

বিপদের মুখে পোতৈাদীদের সম্পত্তি

  • বিতর্ক দুর্ভাগ্য যেন পিছু ছারছে না পোতৈাদী পরিবারের। কেন্দ্রীয় সরকার পোতৈাদী পরিবারের ঐতিহাসিক সম্পত্তিগুলোকে ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যার আনুমানিক মূল্য ১৫,০০০ কোটি টাকা। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট অভিনেতা সাইফ আলি খানকে আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
  • শত্রু সম্পত্তি আইনের বিধান অনুযায়ী, দেশভাগের পর যারা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল, তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তিগুলি কেন্দ্রের অধিকারভুক্ত করা যেতে পারে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর, ১৯৬৮ সালে এই ‘শত্রু সম্পত্তি’ আইন কার্যকর করা হয়।
  • বিচারপতি বিবেক আগরওয়াল রায় প্রদানকালে বলেন যে, সংশোধিত শত্রু সম্পত্তি আইন, ২০১৭ অনুযায়ী একটি আইনি প্রতিকার হিসাবে বর্তমানে বিদ্যমান এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষরা ৩০ দিনের মধ্যে যদি প্রতিনিধিত্ব জমা দিতে চাইলে তা পারবে।
  • ২০১৪ সালে, ‘শত্রু সম্পত্তির’ রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ একটি নোটিশ জারি করে ভোপালে অবস্থিত পোতৈাদী পরিবারের সম্পত্তিগুলোকে "শত্রু সম্পত্তি" হিসেবে ঘোষণা করে।
  • এই বিরোধ আরও তীব্র হয় যখন ২০১৬ সালে ভারত সরকারের এক অধ্যাদেশ জারি করে, যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় যে, এই সম্পত্তিগুলোর উত্তরাধিকারীদের কোনো অধিকার থাকবে না, মানে তৈমুর, সারা আলি খানেদের কপালে রাজকীয় সম্পত্তি ভোগ লেখা নেই।
  • আলোচনাধীন বিশিষ্ট সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস, যেখানে সাইফ তার শৈশব কাটিয়েছিলেন, নূর-উস-সাবাহ প্যালেস, দার-উস-সালাম, হাবিবির বাংলো, আহমেদাবাদ প্যালেস এবং কোহেফিজা সম্পত্তি।
  • আদালতের আদেশ অনুযায়ী, খানকে ১২ জানুয়ারির মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে বলা হয়েছিল, তবে তিনি তা করেছেন কিনা সে বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ নেই।

সম্পর্কের বংশপরম্পরা

  • ১৯৪৭ সালে, ভোপাল একটি দেশীয় রাজ্য ছিল এবং নবাব হামিদুল্লাহ খান ছিলেন এর শেষ নবাব। তার তিন কন্যা ছিল, এবং তার জ্যেষ্ঠ কন্যা আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে পাড়ি দেন।
  • দ্বিতীয় কন্যা সাজিদা সুলতান ভারতে থেকে যান, নবাব ইফতিখার আলি খান পোতৈাদীদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং আইনি উত্তরাধিকারী হন।
  • সাজিদার নাতি, সাইফ আলি খান, এই সম্পত্তির একটি অংশের উত্তরাধিকারী হন। তবে, আবিদা সুলতানের পাকিস্তানে অভিবাসনই সরকারের শত্রু সম্পত্তির দাবির মূল কারণ হয়ে ওঠে।

শত্রু সম্পত্তি আইন কী?

  • শত্রু সম্পত্তি আইন, ১৯৬৮, একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় আইন যা সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও বরাদ্দ নিয়ন্ত্রণ করে, পাকিস্তানের নাগরিকদের যে সম্পত্তি ভারতীয় ভূখণ্ডে ছিল, সেগুলো শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং সরকার তা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
  • এই সম্পত্তিগুলোর মালিকানা ভারত সরকারের অধীনস্থ "শত্রু সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ"-এর হাতে থাকে, যা এগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য তারাই দায়ী।
  • ২০১৭ সালের সংশোধনের মাধ্যমে "শত্রু ব্যক্তির" সংজ্ঞা বিস্তৃত করা হয়, যেখানে আইনানুগ উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তির দাবি নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে এই সম্পদগুলো সরকারের অধীনেই থাকে, যতই মালিকের জাতিয়তা পরিবর্তন হোক।

সম্পাদকীয় মন্তব্য

  • আবিদা সুলতান ছিলেন অসাধারণ একজন রাজকুমারী। ১৯১৩ সালের ২৮ আগস্ট ভোপালের সুলতান প্যালেসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি এবং তার সময়ের প্রচলিত রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানান। তিনি ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় এবং প্রথম মুসলিম মহিলা পাইলট, যিনি বোম্বে ফ্লাইং ক্লাব এবং কলকাতা ফ্লাইং ক্লাব থেকে ফ্লাইং লাইসেন্স অর্জন করেন। বিমানচালনার পাশাপাশি, তিনি ছিলেন এক শিকারি, দক্ষ কূটনীতিক এবং বলিষ্ঠ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন নারী, যিনি পরে পাকিস্তানে অভিবাসন করেন এবং তার উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি ভারতে রেখে যান, যার ফলে ভারতীয় আইনের অধীনে সেগুলো বাজেয়াপ্ত হওয়ার যোগ্য। ২০১৯ সালে, আদালত সাইফ আলি খানকে এই সম্পত্তির একটি অংশের উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার