Happening Now
"স্কুল নিয়োগ কেলেঙ্কারি: অবশেষে জামিন পেলেন ‘কালিঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র
কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গের স্কুল চাকরি কেলেঙ্কারি মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকুর’ শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছে। বিচারপতি অরিজিৎ ব্যানার্জি এবং অপূর্ব সিনহার ডিভিশন বেঞ্চের মাধ্যমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত "স্বাস্থ্যগত কারণে" এই জামিন পেয়েছেন ‘কাকু’।


স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জামিন
- অবশেষে জামিন মঞ্জুর হল SSC দুর্নীতির অন্যতম কাণ্ডারির। কলকাতা হাইকোর্ট স্কুল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’-র অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে।
- বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপুর্ব কুমার'র ডিভিশন বেঞ্চ সুস্থতার কারণ দেখিয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছে।
- তবে এই মঞ্জুরের পেছনে শর্ত দেওয়া হয়েছে যে, সুজয়কৃষ্ণকে নিজের বেহালা বাসভবনেই থাকতে হবে এবং ডাক্তার এবং তাঁর আইনজীবী ছাড়া অন্য কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।
- আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সুজয়কৃষ্ণকে সিবিআই-এর কাছে নিজের ফোন নম্বর জমা দিতে হবে। তদন্তকারী সংস্থা যখন মনে হবে তখন ফোণ চেক বা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
- জামিন মঞ্জুর হয়েছে মানে এই নয় যে তিনি মুক্ত বিহঙ্গ যখন মনে হবে তখন যা খুশি করবেন, বিচারপতির নির্দেশে সর্বক্ষণ সিবিআইয়ের নজরদাড়ি থাকবে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের উপর।
- এক সপ্তাহ আগে সিবিআই অবশেষে সুজয়কৃষ্ণের ভয়েস স্যাম্পল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। এটি একটি অডিও ক্লিপের সাথে মিলিয়ে তদন্ত চালানো হবে বলেও জানান তারা।
- এদিন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষেরও ভয়েস স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়, যা ম্যাজিস্ট্রেটের চেম্বারে রেকর্ড করা হয়েছে।
- আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ‘কালিঘাটের কাকুর’ এই জামিন ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
- হাইকোর্ট ২০ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছিল। ওই দিন মামলার অন্যান্য দিক বিশ্লেষণ করা হবে। তবে আপাতত, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র জেল থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার ও বিতর্কের শিখরে ‘কালীঘাটের কাকু’
- SC দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পরেই এই দুর্নীতিতে নাম উঠে আসে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের ওরফে ‘কালীঘাটের কাকুর’।
- তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে,, তিনি নাকি টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরির ব্যবস্থা করতেন এবং এই প্রক্রিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন।
- ৬১ বছরের এই কালীঘাটের কাকু কিন্তু প্রথম থেকেই এত হোমড়া চোমড়া ছিলেন না, তিনি প্রথমে একটি মুদি দোকান চালাতেন, পরে একটি টাইলসের দোকান খোলেন, এবং এরপর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় যুক্ত হন।
- তাঁর বাসস্থান যদিও দক্ষিণ কলকাতার বেহালায়, কিন্তু তৃনমূলের সাথে যোগসূত্র থাকায় তিনি 'কালীঘাটের কাকু' নামে পরিচিত।
- সূত্র অনুযায়ী, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতেন। তিনি নিজেই বলেছেন যে তিনি নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কাজ করতেন এবং তাঁকে 'বস' বলে সম্বোধন করতেন।
- এরপরেই, শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে পরে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের। ২০২৩ সালের মে মাসে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন প্রার্থীর অ্যাডমিট কার্ড, নাম এবং বিস্তারিত তথ্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে ভাগ করতেন এবং তারপর তাদের চাকরির ব্যবস্থা করতেন।
- এরপর, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে, কলকাতা হাইকোর্ট ইডি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে জামিন মঞ্জুর করে। কিন্তু এরপরে, সিবিআই আবার নতুন করে তদন্ত শুরু করে এবং তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন জানায়।
- এরপরেই আদালত নির্দেশ দেয় যে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে ৯ ডিসেম্বর সিবিআই আদালতে হাজির করা হবে, এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
- সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলছে, এবং আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করেই তাঁর ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।




ব্রডকাস্ট চ্যানেল








ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার






