০৬ জানুয়ারি ২০২৫

Breaking News

৩০ বছর বয়সেই হার্ট অ্যাটাক? কারণ কি?

যুবক যুবতীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি নিয়ে উদবিঘ্ন চিকিৎসকরা। কিন্তু কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে যুবকদের মধ্যে হৃদরোগের সমস্যা?

কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাকের কারণ

  • হার্ট অ্যাটাক? তাও আবার মাত্র ৩০ বছর বয়সে? আগে শুনলে অবাক লাগলেও এখন এই ঘটনা যেন আকছার ঘটছে। হার্ট অ্যাটাক কিন্তু এখন শুধুই বার্ধক্য জনিত রোগ নয়, সব বয়সের জন্যই এটি এখন সমান ভয়ংকর।াকতে পারে।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস- ফাস্ট ফুড, চর্বি ও তেলে ভরা খাবার, এবং চিনি সমৃদ্ধ পানীয়ের অতিরিক্ত গ্রহণ রক্তে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ক্রমশ। ফোনের একটা ক্লিকেই মুহুর্তে খাবার চলে আসছে বাড়িতে, ফল বেশী পরিমানে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ আর তারই প্রভাব পড়ছে হার্টে।
  • শারীরিক সক্রিয়তার অভাব- ব্যাস্থ জীবন সময় কোথায় আমাদের নিজেদের শরীরের দিকে তাকানোর? ফল? শরীরে জমছে মেদ, বাড়ছে স্তুলতা। অফিস কাজের ব্যাস্থতায় নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার সময় কই? ফলে ব্যাহত হচ্ছে শরীরে রক্ত সঞ্চালন এবং হৃদ্‌যন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ছে।
  • ধূমপান এবং তামাক সেবন- ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার তরুণদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সরাসরি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ- কথায় আছে মন ঠিক তো সব ঠিক। বর্তমানে সব কিছু দেখার মাঝে এটাও দেখতে হবে যে মানসিক শান্তি যেন থাকে। পড়াশোনা, চাকরি এবং ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন চাপ তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বেশী মানসিক চাপ বিভিন্ন ক্ষতিকর হরমোন যেমন কর্টিসলের নির্গমনকে বৃদ্ধি করে যা হার্টের জন্য মোটেও ভালো না।
  • অ্যালকোহল সেবন- সপ্তাহহান্তে তো পার্টি মাস্ট,আর তাতে অ্যালকোহলের ফোয়ারা চলবে না তা কি হয়? চিকিৎসকদের মতে এখানেই রয়েছে ঝুঁকি। অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ হৃদ্‌যন্ত্র এবং লিভারের ওপর চাপ ফেলে, যা দীর্ঘমেয়াদী হৃদ্‌রোগের কারণ হতে পারে।
  • জেনেটিক বা বংশগত কারণ- পরিবারের ইতিহাসে যদি হৃদ্‌রোগ থাকে, তাতেও তরুণদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
  • ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা- অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে ওজন বৃদ্ধি এখন খুবই কমন, কিন্তু কমন ব্যাপারটাই কখন নিঃশব্দে হানা দিয়ে প্রান নিয়ে নিচ্ছে তা বোঝাও যাচ্ছে না। ওজন বৃদ্ধির সাথে মেদ বৃদ্ধি হার্টের ধমনীকে সরু করে দিচ্ছে ফলস্বরূপ বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
  • উচ্চ রক্তচাপ- যুবকদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিকে বারাচ্ছে।
  • ডায়াবেটিস- ডায়াবেটিসকে সাইলেন্ট কিলার বলা হয়ে থাকে। যেকোনো ছোট রোগকে ভয়ংকর আকার দিতে পারে এই ডায়াবেটিসের সমস্যা। ডায়াবেটিসের প্রকোপ দিনকে দিন বাড়ছে এবং এটি হৃদ্‌রোগের অন্যতম বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা।
  • অনিয়মিত ঘুম ও কর্মজীবনের চাপ- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব বর্তমান প্রজন্মের যেকোনো রোগ শরীরে বাসা বাঁধার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। অনিয়মিত ঘুমের কারণে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়, যা হৃদ্‌রোগসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যার জন্ম দেয়। তাই শরীরকে রেস্ট দিতে পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষ্মণ ও প্রতিকার

  • চিকিৎসকদের মতে হার্ট অ্যাটাকের সেরম লক্ষ্মণ না প্রকাশ করেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বিদ্যমান থাকতে পারে।
  • হার্ট অ্যাটাকের লক্ষ্মণগুলো হল- বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি: বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকেই বুকের মাঝখানে অস্বস্তি বা ব্যথা হয়। কিছু লোক অস্বস্তিকর চাপ, অনুভব করতে পারে। এটি কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হতে পারে। এটি নিজে থেকেই উপশম হয় এবং তারপরে আবার ফিরে আসতে পারে। বুকের অস্বস্তির থাকতে থাকতেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে আবার অনেক সময় বুক ব্যাথা না থাকলেও অস্বস্তি হতে পারে।ঠান্ডা ঘাম, বমি বমি ভাব, বা হালকা মাথাব্যথা এক বা উভয় হাত, পিঠে বা ঘাড়ে ব্যথা বা অস্বস্তি। পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হতে পারে।
  • হার্ট অ্যাটাকের প্রতিকার- ধুমপান ত্যাগ করা। ধূমপান হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণেরও করে। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সবসময় সীমার মধ্যে রাখা। ওজন বেশি বা স্থূল হলে ওজন হ্রাস করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এমনকি 30 মিনিটের জন্য হলেও দ্রুত হাঁটা খুব সহায়ক হতে পারে। খারাপ চর্বি (স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট) এবং শর্করা সীমিত করতেই হবে। তাজা ফল এবং শাকসবজি এবং হোল গ্রেইন খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান। অ্যালকোহল সেবন সংযত করতে হবে।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার