০৬ জানুয়ারি ২০২৫

মহাকুম্ভ মেলা 2025: ১৪৪ বছর বাদে মেলা ঘিরে কি শুধু ব্যাবসা! লাভ কয়েক লাখ কোটি

১৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলা। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে সাধু ও পর্যটকের ভিড়, গঙ্গা স্নানে পবিত্র হতে সারা বিশ্ব থেকে প্রায় কয়েক শতকোটি মানুষ এসে ভীর জমিয়েছেন।

অর্থনৈতিক খাতে মহাকুম্ভ মেলা 2025-এর মাহাত্ম্য

  • এই বছরের মহাকুম্ভ মেলা লক্ষ্য করে প্রায় ৪০-৪৫ কোটি মানুষের সমাগম হতে পারে উত্তরপ্রদেশে। সরকারের মেলা উপলক্ষ্যে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০০০ কোটি টাকা।
  • মেলার প্রথমদিনেই লোক সমাগম হয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ। যোগী আদিত্যনাথের কথায় প্রত্যেক মানুষ গড়ে কয়েক হাজার টাকা ব্যয় করলে রাজ্যের আর্থিক লাভ হতে পারে ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। লাভবান হবেন ছোট থেকে মাঝারি ব্যাবসায়ীরা।
  • 'ওয়ার্ল্ড লার্জেস্ট টেম্পোরারি সিটি'র তকমা পাচ্ছে প্রয়াগরাজের এই মহাকুম্ভ চত্বর! আমেরিকা ও রাশিয়ায় যতজন মানুষ থাকেন তার থেকেও বেশী লোক সমাগম হবে এই মেলায়। ফলে লাভের অঙ্কটা যে কতটা বিশাল তা বোঝাই যাচ্ছে।

কেন মহাকুম্ভ মেলা?

  • জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৪৪ বছরে একবার এমন বিরল যোগ আসে। তাই তো এই কুম্ভের নাম ‘মহাকুম্ভ’। কুম্ভ মেলা সাধারণত চার প্রকার হয়ে থাকে- পুর্ন কুম্ভ- যা প্রতি ১২ বছর অন্তর অন্তর গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান দেখে অনুষ্ঠিত হয়। কুম্ভ- যা প্রতি ছয় বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় কুম্ভ- প্রত্যেকে ৩ বছর অন্তর গ্রহের অবস্থান দেখে আয়োজিত হয় সেই বছরের কুম্ভ মেলা।মহাকুম্ভ- যা ১৪৪ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকে ৩ বছর অন্তর গ্রহের অবস্থান দেখে আয়োজিত হয় কুম্ভ মেলা। এমনকি সেই অনুসারেই ৪ কুম্ভের মধ্যে কোথায় সেই বছর মেলা লাগবে তা ঠিক করা হয়।
  • জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, মেষ রাশির চক্রে বৃহস্পতি, সূর্য ও চন্দ্র মকর রাশিতে প্রবেশ করলে মহাকুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়। যা ১৪৪ বছরে একবার করে আসে বলে মনে করা হয়ে থাকে।
  • সাধু, সন্ন্যাসী ও অঘোরীদের কাছে এই মহাকুম্ভ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। এই সময়েই আসলে নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার আসল ক্ষণ উপস্থিত হয়। বিশ্বাস, কুম্ভ মেলায় ৪৫ দিন ধরে কল্পবাসের পরে সাধনা করে পুণ্য লগ্নে গঙ্গায় মহাস্নান করলে নাকি মোক্ষ লাভ হয়।

কুম্ভের ইতিহাস

  • দেব ও অসুরের অমৃত কলসের ঘটনা কার না অজানা? সেই ১২ দিনের অমৃত কলস নিয়ে যুদ্ধ মর্তলোকে ১২ বছরের সমান।
  • সেইজন্যই কুম্ভের সংখ্যা ১২টি, যার ফলে পৃথিবীতে আছে ৪ টি কুম্ভ ও ৮টি কুম্ভ রয়েছে দেবলোকে।
  • ভারতে ৪ টি স্থানে যে কুম্ভ গুলি আছে তা হল- প্রয়াগরাজ, নাসিক, উজ্জয়িনী ও হরিদ্বার।
  • পৌরাণিক মতে মহাকুম্ভের সময় নাকি ভগবান শিব, দেবী পার্বতী এবং কৈলাসের অন্যান্য বাসিন্দারা মাঘ পূর্ণিমার দিনে ছদ্মবেশে কুম্ভে আসেন ও মহাকুম্ভের সময় পৃথিবীতে নাকি স্বর্গের দরজা খুলে যায়, দেবতারাও পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং পবিত্র সঙ্গমে স্নান করেন।
  • তবে কুম্ভের প্রচলন নিয়ে বিতর্ক আছে অনেকের মতেই ১৯ শতকের আগে এই মেলার কোন উল্ল্যেখ কিন্তু পাওয়া যায়নি, আবার অনেকের মতে ঋষি শঙ্করাচার্জের হাত ধরেই শুরু হয় কুম্ভ স্নান।

মহাকুম্ভের ব্যাবস্থাপনা

  • এই মহাকুম্ভ মেলা উপলক্ষ্যে ব্যবস্থার কোনও খামতি রাখেনি যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এই মেলার জন্য প্রায় ১০০ টি ট্রেনকে নিযুক্ত করা হয়েছে যা প্রায় ৩,৩০০ বার ট্রিপ দেবে।
  • প্রায় দেড়লক্ষ তাঁবু ফেলা হয়েছে। রান্নঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় ৩০০০ টি। অর্থাৎ কোনো মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
  • যাবতীয় ওয়াকফের মিথ্যে মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গম এখন সাক্ষাৎ স্বর্গে পরিণত হয়েছে। কোটি কোটি মানুষ, বিভিন্ন দেশের ভেদাভেদ মুছে ত্রিবেণী সঙ্গম এখন শুধুই দেহ ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার