০৬ জানুয়ারি ২০২৫

চোরকে জেনেশুনে কেউ টাকা দেয়না, দেউলিয়া সরকার কেন্দ্র নয় - শঙ্কুদেব পণ্ডা

বাংলার অবস্থা খুব সঙ্গিন। নির্বাচন কমিশন থেকে গুলশান কলোনি দিন দিন হয়ে উঠছে দুষ্কৃতিদের আখরা! ট্রু নিউজ বাংলার মুখোমুখি সাক্ষাৎকারে এমনই বললেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা।

1) কেন ভোটব্যাংক অক্ষত তৃণমূলের? ২৯২৬ এ সরকার কি বিজেপির হবে?

  • দেখুন, বাংলায় সরকার গড়ার জন্য বিজেপি একদম প্রস্তুত। সাধারণ মানুষের কৃপায় আমরা আজ লিডিং বিরোধী দল। কিন্তু সেই স্থানে আমরা পৌঁছাতে পারছি না কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্গত পুলিশ থেকে প্রশাসন সবই দুর্নীতিগ্রস্থ । উনার এই দুর্নীতিপূর্ণ সরকারকে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন যদি হাতেনাতে ধরতে পারে তাহলে বাংলায় বিজেপি আসতে কেউ বাঁধা দিতে পারবে না। বাংলায় কখনই ফ্রি এবং ফেয়ার ইলেকশন হয় না, হলে তৃনমূল কখনই সরকার গড়ে তুলতে পারত না। বিজেপি ইতিমধ্যেই সরকার তৈরির ধাপে কয়েক কদম এগিয়ে।

২) রাহুল সিনহাকে কি বিজেপি সঠিকভাবে ব্যাবহার করতে পারেননি! কি মনে হয় আপনার?

  • না, এটা সঠিক নয়, রাহুলদা প্রায় ১৪ বার বিধানসভা ভোটের জন্য দাড়িয়েছিল। পার্টি মনে করেছে তাই রাহুলদাকে নির্বাচনে দাড় করিয়েছিল, এটা সম্পূর্ণই পার্টির নিজস্ব ব্যাপার ও কৌশল। দেখুন দলীয় অন্তর্বর্তী সমস্যা থাকবেই, সেটা আমরা দেখছি এবং আশা করছি খুব তারাতারি তা ঠিক হয়ে যাবে।

৩) বর্তমানে বাংলার এক জ্বলন্ত সমস্যা অনুপ্রবেশ, বিজেপির কি পদক্ষেপ এই নিয়ে?

  • লক্ষ করলেই দেখা যাবে বাংলার যে স্থানে অনুপ্রবেশ বেশী সেই স্থানেই কম ভোট পাচ্ছে বিজেপি। কারণ অনুপ্রবেশ করাচ্ছে তৃনমূল আর তারা সবাই সংখ্যালঘিষ্ট ফলে হিসাব খুব সোজা। একটু লক্ষ করলেই দেখবেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আমরা কম ভোট পেয়েছি, কারণ ওইসব এলাকায় তো অনুপ্রবেশের বন্যা বইয়ে দিয়েছে তৃণমূল। বাংলার পুরো ডেমোগ্রাফি এরা বদলে দিচ্ছে। সবার আগে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে, নাহলে অনুপ্রবেশ বন্ধ ও সঠিক ভোট কখনই পাওয়া যাবে না।

৪) ভারতীয় ইলেকশন কমিশনও কি দুর্নীতিগ্রস্ত?

  • দেখুন ভারতীয় ইলেকশন কমিশনের প্রতি সণ্মান রেখেই আমি বলছি, এখানেও যথেষ্ট দুর্নীতি আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার এই কমিশনে কাদের চাকরি দিয়েছে তাই নিয়েও তদন্ত দরকার। যতক্ষণ না সিস্টেমের গোড়ায় গিয়ে আসল সমস্যা বোঝা যাচ্ছে ততদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নীতিরাজ চলবে। ডোমজূরের মতো যায়গায় ৪০ টি বুথ থেকে প্রায় নির্বাচন হয় না, সেখানথেকেই তৃনমূল প্রায় কয়েক হাজার ভোট পেয়ে যায়। পুরো পুলিশ দিয়ে প্রশাসন চালাচ্ছেন দিদি, এই একই ভাবে শেষের দিকে রাজত্ব করেছে সিপিএম। মমতা রাজও আজকে শেষের দিকে। বাংলাদেশের অনুপ্রবেশ ঢোকাচ্ছে তারা এসে ভোট দিচ্ছে নাহলে বিজেপি কখনই হারে না, বিজেপি জেতার স্থানে আছে।

৫) কিন্তু সীমানায় তো বিএসএফ আছে, এত অনুপ্রবেশ কেন হচ্ছে? তাহলে কি বিএসএফও দুর্নীতির শাঠ জড়িয়ে?

  • না সেটা কখনই নয়, আপনাদের ধারণাই নেই ভোটের সময় সীমান্ত এলাকায় কি হয়। ভোটের সময় ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার যায়গা বিএসএফকে অপারেট করতে না দিলে, সরাসরি পুলিশের যোগ থাকলে কিভাবে সম্ভব ক্লিন এবং ফেয়াড় ইলেকশন? বাংলা এখন নির্ধিদায় অন্য দেশ থেকে যাতায়াতের রাস্তা হয়ে গেছে।

৬) সম্প্রতি গুলশান কলোনির বাসিন্দা কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষএর উপর গুলি চালিয়েছিল কিছু দুষ্কৃতীরএ , এই গুলশান কলোনির নাম অহরহ শোনা যাচ্ছে তাহলে কি রাজ্য সরকারের শক্তি এখন ওখানে যাচ্ছে?

  • এসব পুরোটাই আসলে সরকারের অন্তর্দ্বন্দ্ব। গুলশান কলোনির সব সরকারি জমি বেঁচে দিচ্ছে এরা ফলে সেই জমি নিয়ে বিবাদ। এদের নিজেদের মধ্যেও যে কোন বাঁধন নেই তাই বোঝা যাচ্ছে। আমরা অনেকদিন আগেই এই অঞ্চল নিয়ে থানাকে বলেছিলাম, উত্তরপ্রদেশ থেকে এসটিএফ এসে এই গুলশান কলোনি থেকে ১৫ জন অপরাধীদের ধরে নিয়ে গেছে, তাহলেই বুঝুন কি অবস্থা। বাংলাদেশীরা এসে জাল আধার কার্ড বানাচ্ছে, লুঠতরাজ চলছে এই কলোনিতে, বেআইনি বসবাস তৈরি করছে আর পুলিশ চোখে ঠুলি পরে বসে আছে। বাংলা ক্রমাগত বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছে।

৭) কেন্দ্র নাকি খালি বাংলাকে বঞ্চনা করে, এই একপাক্ষীকতা কেন?

  • কে বলেছে বাংলাকে টাকা দেয় না কেন্দ্র? টাকা তো কারোর একার সম্পত্তি নয়, টাকা সাধারণ মানুষের। টাকা তো এরা নয়ছয় করে, একেকটি প্রকল্পের জন্য যা টাকা দেওয়া হয়েছে তার সঠিক হিসাব রাজ্য সরকার দিতে না পারলে কেন্দ্র কি করে পরের টাকা দেবে? আবাস থেকে সড়ক সব টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কি করে টাকা দেবে কেন্দ্র? চোরকে কি জেনেশুনে আরও টাকা কেউ দেয়? কেউ দেয় না কারণ কেন্দ্র জনগণের সরকার।

.

ব্রডকাস্ট চ্যানেল

ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার